গবষকরা বলছেন মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশে এসিই-২ নামে এক ধরনের প্রোটিন রয়েছে যা সংক্রমিত অংশে ভাইরাসকে কোষের সঙ্গে ধরে রাখে।
করোনাভাইরাসের প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত এসিই২। শ্বাস নালী এবং ফুসফুসেও রয়েছে এই প্রোটিন।
গবেষকরা বলছেন, তারা মানুষের চোখেও ওই একই প্রোটিনের উপস্থিতি পেয়েছেন। এই উপস্থিতি তাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, করোনাভাইরাসের লক্ষ্য হতে পারে চোখও।
নতুন এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে বায়োআর্কাইভ ওয়েবসাইটে। সাইটটি দ্রুততম সময়ে গবেষণা প্রকাশ করার জন্য পরিচিত, তবে সাইটটি এতে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ 'পিয়ার রিভিউ' বা প্রকাশের আগে অন্যান্য গবেষকদের মাধ্যমে যাচাই করিয়ে নেয় না। কোনো গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের আগে পিয়ার রিভিউ করিয়ে নেওয়া জার্নালগুলোর প্রতিষ্ঠিত রেওয়াজ। কোনো কোনো জার্নালে বা অঞ্চলে এটি বাধ্যতামূলকও।
নতুন এই গবেষণা বিষয়ে প্রধান গবেষক লিংলি ঝৌ বলেন, “কর্নিয়ার পাতলা আচ্ছাদনসহ চোখের উপরিভাগ সার্স-কোভ-২ এর মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারে এবং প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির শরীরে ছড়াতে পারে।”
গবেষণায় ১০টি ময়নাতদন্তের চোখ যাচাই করেছেন গবেষকরা। মৃত ব্যক্তিদের কেউই করোনাভাইরাসে মারা যাননি।
গবেষণার দেখা গেছে ১০টি চোখেই এসিই-২ রয়েছে। কর্নিয়া, চোখের পাতার ভেতরে এবং চোখের সাদা অংশসহ অন্যান্য জায়গায় পাওয়া গেছে এই প্রোটিন।
গবেষকরা বলেন, “চোখের উপরিভাগের কোষ আক্রান্ত হলে তা ভেতরেও চলে যেতে পারে, গুরুত্বপূর্ণ এই ভাইরাস পরিবাহকের অন্য ব্যক্তিকে আক্রান্ত করার স্বক্ষমতাও রয়েছে।”
সম্প্রতি এক নার্স দাবি করেন, করোনাভাইরাসের মূল লক্ষণগুলোর একটি হতে পারে লাল চোখ। এরপরই সামনে এসেছে নতুন এই গবেষষণা।
ওয়াশিংটনের লাইফ কেয়ার সেন্টারের চেলসে আর্নেস্ট নামের ওই নার্স বলেন, লাল চোখ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ’।
সিএনএনকে আর্নেস্ট বলেন, “তাদের চোখ অ্যালার্জি আক্রান্ত চোখের মতোই। চোখের সাদা অংশ লাল এমনটা নয়। চোখের বাইরের দিকে লাল চোখের একটি আভাস।”
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অপথ্যালমোলজি বলছে, “আপনি যদি কারও এমন গোলাপি চোখ দেখেন, আতঙ্কিত হবেন না। এর মানে এটা নয় যে ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।”
“যদিও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মনে করেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক থেকে তিন শতাংশের চোখই কেবল গোলাপি হয়।”
“আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের তরল বা যে বস্তু ওই তরল বহন করছে তা স্পর্শ করলে ভাইরাস ছড়াতে পারে।”