করোনাভাইরাস: এক চতুর্থাংশ এয়ারবিএনবি কর্মী চাকরিচ্যুত

মঙ্গলবার করোনাভাইরাস মহামারীর বাস্তবতায় চাকরি হারিয়েছেন এয়ারবিএনবি-এর এক হাজার নয়শ’ কর্মী। বাসা সন্ধান, স্বল্পকালীন ভাড়া নেওয়া ইত্যাদি সেবা দিয়ে থাকে মার্কিন এ ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর আবাসন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2020, 04:32 PM
Updated : 6 May 2020, 04:32 PM

“খুবই দুঃখের কিছু সংবাদ শেয়ার করতে” মঙ্গলবার সকালে কর্মীদের কাছে নোট পাঠিয়েছেন এয়ারবিএনবি প্রধান নির্বাহী ব্রায়ান চেসকি। ওই নোটের বরাতে সবাই জানতে পারে নিজ জনশক্তির প্রায় ২৫ শতাংশই ছাঁটাই করে দিয়েছে এয়ারবিএনবি। প্রতিষ্ঠানটির সাত হাজার পাঁচশ’ কর্মীর মধ্যে এক লহমায় চাকরি হারিয়েছেন এক হাজার নয়শ’ কর্মী। এখন পর্যন্ত সিলিকন ভ্যালি প্রতিষ্ঠানে হওয়া সবচেয়ে বড় মাপের ছাঁটাইগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি।  -- খবর প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেটের।

“যখন আপনারা আমাকে ছাঁটাইয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমি বলেছিলাম, যে কোনো কিছু হতে পারে। এটির মুখোমুখি হওয়া মারাত্মক কঠিন, এবং যাদেরকে এয়ারবিএনবি ছাড়তে হবে, তাদের জন্য এটি আরও কঠিন”। - নোটে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন এয়ারবিএনবি প্রধান।

মহামারীর এই সময়ে আর্থিকভাবে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে এয়ারবিএনবি। লাখো লাখো রিজার্ভেশন বাতিল হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির, মুনাফা দূরে থাক আয় এসে ঠেকেছে তলানিতে। মহামারীর আগ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলছিল। প্রতিষ্ঠানটিকে শেয়ার বাজারে আনার প্রস্তুতিও এগুচ্ছিল। এই বসন্তেই ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং” বা আইপিও ছাড়ার কথা ছিলো প্রতিষ্ঠানটির। বর্তমান পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ার পর পিছিয়ে গেছে সব পরিকল্পনা। 

কর্মীদের উদ্দেশ্যে লেখা নোটে চেসকি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে এয়ারবিএনবি যা আয় করেছিল তার অর্ধেকেরও কম আয় হবে এ বছর। গত বছর এয়ারবিএনবি'র আয় ছিল ৪৮০ কোটি ডলার।

ভ্রমণনির্ভর সেবাদাতা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থাও খুব একটা ভালো নেই। গত সপ্তাহেই ৯৮২ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের খবর জানিয়েছিল রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা লিফট। আরও গুজব ছড়িয়েছে, নিজ প্রতিষ্ঠানের মোট জনশক্তির ২০ শতাংশকে ছাঁটইয়ের পরিকল্পনা করছে উবার। এবং তা ঘটলে, চাকরি হারাবেন প্রায় পাঁচ হাজার চারশ’ কর্মী।

“আমরা সবাই মিলে আমাদের জীবনের তীব্র সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, এবং এটি যখন শুরু হচ্ছে, গোটা বিশ্বেই লোকজনের যাতায়াত থেমে আছে”। - লিখেছেন চেসকি। “এয়ারবিএনবি-এর ব্যবসা কঠিন ধাক্কা খেয়েছে”।

নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে গত মাসে দুইশ’ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল এয়ারবিএনবি, কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি নিজেদের নতুন সব প্রকল্পে খরচ করা বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বুটিক হোটেল বা বিলাসবহুল ভাড়ার মতো প্রকল্পগুলোতে এখন আর হাত দেবে না এয়ারবিএনবি।

এখন এয়ারবিএনবি “আরও কেন্দ্রীভূত ব্যবসা কৌশল” হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন চেসকি। ছাঁটাই করা কর্মীদের অন্তত ১৪ সপ্তাহের বেতন এবং ১২ মাসের স্বাস্থ্য বীমা দিচ্ছে এয়ারবিএনবি।

“আমি সত্যিই দুঃখিত” – কর্মীদেরকে লিখেছেন চেসকি। “জানবেন, এটি আপনার দোষ নয়।”