করোনাভাইরাস: চীনে এলো ‘অ্যান্টি-ভাইরাস’ গাড়ি!

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এবারে অ্যান্টি-ভাইরাস ফিচারসহ গাড়ি উন্মোচন করছে গাড়ি নির্মাতা একাধিক চীনা প্রতিষ্ঠান।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 May 2020, 02:42 PM
Updated : 1 May 2020, 02:42 PM

গাড়ির ভেতরে মাস্ক পরে যতোটা সুরক্ষা পাওয়া যায় মাস্ক ছাড়াই একই রকমের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই নতুন মডেলের এই গাড়িগুলোর লক্ষ্য-- খবর বিবিসি’র।

এমন ফিচারের গাড়িগুলো বানাতে নজর দিয়েছে গিলিসহ চীনের বড় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। লন্ডনের রাস্তায় চলা ঐতিহ্যবাহী কালো ক্যাবও বানায় গিলি।

অ্যান্টি-ভাইরাস ফিচারের গাড়িও প্রথম উন্মোচন করেছে গিলি। বড় দূষিত শহরগুলোর জন্য গাড়িতে এ ধরনের ফিচার নিয়ে আগে থেকেই কাজ করছিলো প্রতিষ্ঠানটি। আগের কাজের ওপর ভিত্তি করেই তারা এনেছে অ্যান্টি-ভাইরাস ফিচার।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তাদের ‘হেলদি কার প্রজেক্ট’ ক্ষুদ্র অণুগুলোকে গাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং যাত্রী ও চালককে ক্ষতিকর উপাদান থেকে সুরক্ষিত রাখে।

গাড়ির নিয়ন্ত্রণ সুইচ এবং দরজার হাতল ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসমুক্ত রাখতে অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদানও বানাচ্ছে গিলি।

প্রতিষ্ঠানের এক মুখপাত্র বলেন, “গ্রাহক অনেকটা সময় তাদের গাড়িতে থাকেন, এটি অনেকটা তাদের ‘দ্বিতীয় বাড়ি’। শুধু স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য বানিয়েই কী আমরা গ্রাহকের জীবন মানের চাহিদা পূরণ করতে পারবো?”

চালক এবং যাত্রীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন লক্ষ্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে  গিলি।

প্রতিষ্ঠানের নতুন ‘কনট্যাক্টলেস’ গাড়ি সরবরাহ সেবার অংশ হিসেবে ড্রোনের মাধ্যমে মালিককে গাড়ির চাবি হস্তান্তরের কাজটি চলছে বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

অন্যদিকে অপশনাল ফিচার হিসেবে গাড়িতে আল্ট্রাভায়োলেট বাতি যোগ করেছে আইকনিক ব্রিটিশ ব্র্যান্ড এমজি। গাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে বায়ুকে জীবানুমুক্ত করবে এই বাতি।

নতুন অনেক মডেলের গাড়িতে তিন স্তরের বায়ু শোধন ব্যবস্থা যোগ করেছে জিএসি নামে পরিচিত গুয়ানজু অটোমোবিল।

গাড়িতে এই অ্যান্টি-ভাইরাস ফিচারগুলোকে কেবল সস্তা চমক দাবি করেছেন অনেকে। আবার এর পক্ষেও রয়েছে বিশেষজ্ঞ সমর্থন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রস্ট অ্যান্ড সালিভানের দাবি, নতুন এই ব্যবস্থাগুলো কেবল সস্তা চমক নয়।

প্রতিষ্ঠানের মবিলিটি বিশেষজ্ঞ ভিভেক ভাইদিয়া বলেন, “গাড়ির স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফিচারে অবশ্যই নজর দেওয়া হয়েছে। এই ফিচারগুলোর উন্নয়ন আগে থেকেই চলছে, কিন্তু কোভিড-১৯ এর বিস্তার এতে আরও গতি এনেছে।”

অন্যদিকে চায়না মার্কেট রিসার্চ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শন রেইনের দাবি, “পণ্য ও সেবা বিক্রি করতে প্রতিষ্ঠানগুলো কোভিড-১৯ এর আতঙ্ক ব্যবহার করার চেষ্টা করছে এবং এগুলোর জন্য প্রিমিয়াম মূল্য নেওয়ার চেষ্টা করছে।”

রেইন আরও বলেন, “গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও এখন চাচ্ছে, তাদের গাড়ি ভাইরাস থেকে নিরাপদ এমনটা দেখাতে। আমি ডাক্তার বা বিজ্ঞানী নই, কিন্ত কোনো প্রতিষ্ঠান যদি বলে তাদের পণ্য ভাইরাস নিরোধী, বিশেষ করে কোভিড-১৯ ভাইরাস, আমি সেক্ষেত্রে গ্রাহককে সতর্ক থাকতে বলবো।”

চলতি মাসের শুরুতে রঙের প্রতিষ্ঠান নিপ্পন জানিয়েছে যে, তারা নতুন অ্যান্টিভাইরাস কোটিং বানিয়েছে। এই কোটিং লাগানো কোনো জায়গা থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ হবে না। যদিও নির্দিষ্ট করে করোনাভাইরাসের উল্লেখ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।

জাপানি প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, হাসপাতালে ব্যবহারের জন্যই তৈরি করা হয়েছে নতুন ভাইরাসগার্ড কোটিং। করোনাভাইরাস মহামারীর মূল কেন্দ্র উহানের চারটি হাসপাতালে এই কোটিং দান করেছে নিপ্পন।