করোনাভাইরাস থামাতে পাঁচ খাতে উদ্ভাবন দরকার: গেটস

নভেল করোনাভাইরাস মহামারী থামাতে এবং অর্থনীতি পুনরায় চালু করতে আমাদের কী করা উচিত, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার এক ব্লগ পোস্টে নিজের চিন্তাধারা তুলে ধরেছেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2020, 09:49 AM
Updated : 24 April 2020, 12:31 PM

ওই ব্লগ পোস্টে গেটস বলেন, চিকিৎসা, টিকা উদ্ভাবন, পরীক্ষা এবং সংস্পর্শ পর্যবেক্ষণের কাজে বিশ্বে আরও উন্নয়ন দরকার। পাশাপাশি, বৈশ্বিক অর্থনীতি চালুর নীতিমালাগুলো পরীক্ষা করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।

চলমান এই মহামারীকে একটি যুদ্ধের সঙ্গেই তুলনা করেছেন গেটস-- খবর সিএনবিসি’র।

গেটস বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, রেডার, নির্ভরযোগ্য টর্পেডো এবং কোড ভাঙ্গার প্রযুক্তিসহ দারুন কিছু উদ্ভাবনের কারণে যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে। মহামারীর ক্ষেত্রেও তাই হবে।”

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় পাঁচ খাতে উদ্ভাবন দরকার বলে মনে করেন গেটস-

চিকিৎসা- গেটস স্বীকার করেছেন যে, কিছু চিকিৎসা হয়তো কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না, কিন্তু কিছু চিকিৎসা করোনাভাইরাসের বোঝা কমাবে। ফুটবল খেলা বা কনসার্টের মতো জনসমাবেশে মানুষ তখনই নিরাপদ অনুভব করবে যখন কোনো চিকিৎসা ৯৫ শতাংশ কার্যকর হবে। রক্তের প্লাজমা বা অ্যান্টিবডি, অ্যান্টিভাইরাল এবং হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের সম্ভাবনার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন তিনি।

টিকা- “অলৌকিক একটি চিকিৎসার অভাব”, একমাত্র যার উপস্থিতিই মানুষকে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর ক্ষমতা রাখে, বলেন গেটস। যদিও সাধারণত নতুন কোনো রোগের টিকা বাজারে আসতে পাঁচ বছর সময় লাগে, তবে তিনি আশাবাদী ১৮ মাসের মধ্যেই টিকা আসবে।

পরীক্ষা- কোভিড- ১৯ পরীক্ষায় অগ্রাধিকারের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক করা উচিত এবং পরীক্ষার গতি বাড়ানো উচিত যাতে এক দিনে ফলাফল পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য কর্মীদের সকলেরই পরীক্ষা করার সক্ষমতা থাকা উচিত। আর লক্ষণ নেই এমন রোগীদেরকে অপেক্ষায় রেখে লক্ষণ রয়েছে এমন রোগীদের আগে পরীক্ষা করা উচিত। মানুষ যাতে বাসাতেই পরীক্ষা করতে পারেন সে ব্যবস্থাও থাকা উচিত, এটি দ্রুততম সময়ে ফলাফল হোক বা ল্যাবে নমুনা পাঠানোর মাধ্যমে হোক।

সংস্পর্শ পর্যবেক্ষণ- করোনাভাইরাস পজিটিভ এমন ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে থাকলে তাদের উচিত পরীক্ষায় প্রাধান্য দেওয়া এবং নিজে থেকে আইসোলেশনে থাকা, বলেন গেটস। মাইক্রোসফট সহ-প্রতিষ্ঠাতা মনে করেন, সংস্পর্শ পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ দেশ জার্মানিকে অনুসরণ করবে।

উন্মুক্ত হওয়া- গেটসের বিশ্বাস সামনের দুই মাসের মধ্যে বেশিরভাগ উন্নত দেশ মহামারীর দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে। এখানে বিশ্ব হবে আধা-স্বাভাবিক, যেখানে মানুষ তখনও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন। অন্যান্য দেশ যারা পরীক্ষার দিক থেকে এগিয়ে তাদের কাছে থেকে শিখতে হবে। ঝুঁকি এবং লাভ বিবেচনা করে কর্মকর্তাদের বাণিজ্য করতে হবে বলেও জানিয়েছেন বিশ্বের এক সময়ের এই শীর্ষ ধনী।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির দেওয়া তথ্যমতে, গত বছর চীনের উহানে উৎপত্তির পর এ যাবৎ বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ লাখ ছাড়িয়েছে। আর প্রাণ গেছে এক লাখ ৯০ হাজারের বেশি মানুষের।