টেসলার অটোপাইলট দুর্ঘটনা: গেইম খেলছিলেন চালক

টেসলার অটোপাইলট দুর্ঘটনার সময় চালক গেইম খেলছিলেন বলে বিশ্বাস তদন্তকারীদের। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ওই দুর্ঘটনায় নিহত হন অ্যাপলের এক কর্মী।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2020, 01:22 PM
Updated : 27 Feb 2020, 01:25 PM

মার্কিন ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেইফটি বোর্ডের (এনটিএসবি) পক্ষ থেকে বলা হয়, দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি টেসলার অটোপাইলট সফটওয়্যারের সাহায্যে আধা-স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলছিলো-- খবর বিবিসি’র।

অটোপাইলট মোডে চালকের হাত স্টিয়ারিং হুইলে রাখার নির্দেশনা দিয়ে থাকে টেসলা। তবে, এনটিএসবি জানিয়েছে অটোপাইলট ব্যবস্থায় টেসলা পরিবর্তন না আনলে আরও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

দুর্ঘটনার পর দুই বছরের তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে এনটিএসবি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, টেসলার অটোপাইলট সফটওয়্যার গাড়িটিকে একটি ত্রিকোণাকার রাস্তার ক্রসিংয়ে নিয়ে গেছে এবং গতি বাড়িয়ে কংক্রিটের দেয়ালে ধাক্কা দিয়েছে।

গাড়ির সামনের অংশটি বিচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় অন্য আরও দু’টি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

৩৮ বছর বয়সী টেসলা চালক ওয়ালটার হুয়াংকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও পরবর্তীতে তিনি মারা গেছেন। বেঁচে গেছেন অন্যান্য চালকরা।

এনটিএসবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে--

  • টেসলা চালক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেননি কারণ তিনি স্মার্টফোনের একটি ভিডিও গেইমে মগ্ন থাকায় অমনযোগী হয়ে পড়েছিলেন।
  • টেসলার সংঘর্ষ এড়ানোর ব্যবস্থায় “বাধা শনাক্ত করার ব্যবস্থা নেই।”
  • টেসলার অটোপাইলট সফটওয়্যারে “চালকের অন্তর্ভুক্তি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।”

টেসলা গাড়ির বেশ কিছু দুর্ঘটনায় অটোপাইলট সক্রিয় ছিল বলেও বিবিসি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

অটোপাইলট মূলত চালকের জন্য সহায়ক একটি আধাস্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। লেইন পরিবর্তন এবং গতির সামঞ্জস্য রাখতে সহায়তা করে ব্যবস্থাটি।

অন্যদিকে সমালোচকদের দাবি, ‘অটোপাইলট’ ব্র্যান্ডিংয়ের কারণে অনেক চালকই মনে করেন গাড়ি পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলছে।

এনটিএসবি বলছে চালক সফটওয়্যারের ওপর ‘অতিরিক্ত নির্ভরশীল’ হয়ে পড়েছে।

কিছু পরামর্শ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন শেষ করেছে এনটিএসবি। পরামর্শগুলো হলো--

  • ট্রাফিকের বাধার মতো সাধারণ বাধাগুলো শনাক্ত করতে সংঘর্ষ এড়ানোর ব্যবস্থা আরও উন্নত করা।
  • সফটওয়্যারের পরিকল্পিত নকশার বাইরের ঝুঁকিগুলোতে গাড়ি কেমন আচরণ করে তা বিবেচনা করে দেখা।
  • স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় চালকের আত্মতুষ্টি কমানোর ব্যবস্থা করা।
  • আধা-স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার নতুন সব গাড়িতে যাতে নতুন মান অনুযায়ী চালককে পর্যবেক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকে তা নিশ্চিত করা।

স্মার্টফোন নির্মাতাদেরকে এমন ব্যবস্থা বানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে চালক অমনযোগী হয়ে পড়লে তা শনাক্ত করা যায়। গাড়ি চলাকালীন চালক অমনযোগী হতে পারেন স্মার্টফোনের এমন ফিচারগুলো যাতে লক করে দেওয়া হয়।

অ্যাপলের উদ্দ্যেশ্যে এনটিএসবি জানিয়েছে, “এমন নীতিমালা আনা প্রয়োজন, যাতে গাড়ি চালানোর সময় জরুরী নয় এমন পোর্টেবল ডিভাইসগুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন প্রতিষ্ঠানের সব কর্মী এবং ঠিকাদাররা।”

বিষয়টি নিয়ে জানতে বিবিসি’র পক্ষ থেকে টেসলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিষ্ঠানটি।