জার্মানিতে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ‘পরিবর্তন আনবে’ উবার

জার্মানিতে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে নিজেদের সেবা প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনবে উবার। সম্প্রতি দেশটির এক আদালত রায়ে জানিয়েছে, স্থানীয় কিছু আইন ঠিকভাবে মানছে না রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2019, 09:46 AM
Updated : 21 Dec 2019, 09:46 AM

আদালতের ওই রায়ের পরপরই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে উবার। জার্মানিতে স্বাধীন গাড়িচালকদের বদলে গাড়ি ও ট্যাক্সি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের সেবা দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। তবে, দেশটির বাণিজ্য সংস্থা ‘ট্যাক্সি ডয়েশল্যান্ডের’ অভিযোগ, ‘জার্মানির যাত্রী পরিবহন আইন ভেঙেছে উবার’। -- খবর বিবিসি’র।  

জার্মানিতে নিজেদের সেবা ‘সচল’ রেখেই পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছে উবার।

আদতে মূল সমস্যাটি অন্য জায়গায়। অধিকাংশ দেশেই যাত্রী ও স্বাধীন গাড়ি চালকদের অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত করে থাকে উবার। তবে, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কিছু দেশের আইনে উবার চালকদের ‘বীমা’ বাধ্যতামূলক, কিছু দেশের আইনে যাত্রীদেরকে উবার সেবা দেওয়ার জন্যও আলাদা করে ‘অনুমোদন’ নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

জার্মানিতে ‘উবারপপ’ নামের একটি সেবা নিয়েই ঘটে যত বিপত্তি। ওই সেবার মধ্য দিয়ে ‘অননুমোদিত’ চালকদের সঙ্গে যাত্রীদেরকে সংযুক্ত করিয়ে দিয়েছিল রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিল ‘ট্যাক্সি ডয়েশল্যান্ড’। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৫ সালে সেবাটি নিষিদ্ধও করে জার্মানির এক আদালত।

তারপর থেকেই জার্মানিতে অনুমোদিত গাড়ি ভাড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে উবার। যাতে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুমোদিত চালকরাই শুধু যাত্রীদেরকে সেবা দিতে পারে। তবে, এতেও রয়েছে সমস্যা। ট্যাক্সি ডয়েশল্যান্ড বলছে, ১৯৮০ সালে জার্মানির আইনে পরিণত হওয়া ‘প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্টেশন অ্যাক্ট’ লঙ্ঘন হচ্ছে এতে।               

জার্মানির ওই আইনে বলা হয়েছে, যাত্রা সম্পন্ন করে মূল প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসতে হবে গাড়ি ভাড়া সেবার চালকদের। ইচ্ছামতো গাড়ি চালানো বা যাত্রী পাওয়ার লক্ষ্যে রাস্তার পাশে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করার বিধান নেই ওই আইনে। সাম্প্রতিক অভিযোগে বলা হয়েছে, গাড়ি ভাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওই আইন মানানোর জন্য উবারের চেষ্টায় ঘাটতি রয়েছে।

আইনে আরও বলা হয়েছে, গাড়ি ভাড়া যাবে কি-না সে সিদ্ধান্ত শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিতে পারবে, চালকরা নিতে পারবেন না।

ফলে জার্মানিতে কেউ উবার অ্যাপ ব্যবহার করলে প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে ‘নিকটবর্তী’ চালক খুঁজে বের করে এবং তারপরে ওই চালকের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যালয় থেকে বুকিংয়ের অনুরোধ পাঠায়। প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে করার কোনো উপায় নেই। পুরো কাজটি করতে ডিসপ্যাচ কর্মকর্তার সহযোগিতা নিতে হয়।        

সাম্প্রতিক অভিযোগে বলা হয়েছে, উবার এই নিয়মটিও ঠিকভাবে মানছে না।

অভিযোগটি নিয়ে এক বিবৃতিতে উবার বলেছে, “আমরা আদালতের রায় পর্যালোচনা করব এবং জার্মানিতে আমাদের সেবা অব্যাহত রাখতে পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নিব সে সিদ্ধান্ত নেব।”

আদালতের রায়ে আপিল করা হবে কিনা সে চিন্তাও করছে প্রতিষ্ঠানটি।

আপাতত জার্মানিতে নিজেদের সেবা চালু রাখা নিয়ে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবে না প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, অভিযোগকারী সংস্থা ‘ট্যাক্সি ডয়েশল্যান্ড’ জানিয়েছে, রায় মানা হচ্ছে কি-না তা নজরে রাখবে তারা।

বিবিসি উল্লেখ করেছে, অতীতেও নিজেদের ব্যবসা প্রক্রিয়ার জন্য বহু দেশে জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে উবার।