যেসব ব্যবহারকারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হতে পারেন বলে মনে করেছে প্ল্যাটফর্মটি তাদের ভিডিওগুলোকেই কৃত্রিমভাবে আটকে দেওয়া হয়েছিল, বড় পরিসরে আর পৌঁছাতে দেওয়া হয়নি। কাজটি করা হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। -- জার্মান সংবাদমাধ্যম নেটজপলিটিক ডটঅর্গের বরাতে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।
ব্যবহারকারীভেদে ভিডিওগুলোকে বিভিন্ন উপায়ে ঠেকানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে। অনেক ব্যবহারকারীর ভিডিওকে দেশের বাইরের দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হয়নি। আবার অনেক ব্যবহারকারীর ভিডিওকে টিকটকের ‘ফর ইউ’ অংশ থেকেই সরিয়ে রাখা হয়েছিল।
এ সংক্রান্ত একটি নথিও এসেছে নেটজপলিটিক ডটঅর্গের হাতে। নথিটিতে লেখা ছিল, ‘শারীরিক বা মানসিক অবস্থার কারণে হয়রানির শিকার হতে পারেন’ এমন ব্যবহারকারীরা ওই স্বয়ক্রিয় নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বেন। মুখে বিকৃতি রয়েছে, ডাউনসিন্ড্রোম রয়েছে বা অটিস্টিক, শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার এমন ব্যবহারকারীরা এ তালিকায় পড়বেন বলেও লেখা রয়েছে নথিটিতে।
নথিটিতে লেখা হয়েছে, হয়রানি শঙ্কার কারণে বিশেষ কিছু ব্যবহারকারীকেও নিষেধাজ্ঞা তালিকায় রাখা হবে, এরা ‘অটো আর’ শ্রেণীভুক্ত হবেন।
যারা নিজেদের সমকামি বা নন-বাইনারি হিসেবে পরিচিতি দিয়েছেন এবং যাদের প্রোফাইলে ‘রংধনু’ পতাকা রয়েছে তারাও এ তালিকায় থাকবেন। এ ছাড়াও স্থুলকায় ব্যবহারকারীদেরও তালিকাভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
পুরো ঘটনাটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে টিকটক। প্ল্যাটফর্মে হয়রানি ঠেকানোর সাময়িক সমাধান হিসেবেই কাজটি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। টিকটক আরও জানিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী কোনো সমাধানের লক্ষ্যে কাজটি করা হয়নি।
পরে এক বিবৃতিতে টিকটক জানিয়েছে, “অ্যাপে হয়রানি বেড়ে যাওয়ায় সাময়িকভাবে ওই নীতি অবলম্বন করেছি আমরা। আমাদের উদ্দেশ্য ভালো থাকলেও পদ্ধতিটি ভুল ছিল। আমরা এরইমধ্যে আগের ওই নীতি বদলেছি এবং নতুন হয়রানি বিরোধী নীতি ও ইন-অ্যাপ সুরক্ষা এনেছি।”
এর আগে, বেইজিংয়ের প্রচলিত ধারণা বিরোধী হতে পারে এমন ভিডিও সরিয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছিল টিকটক। ওই সময় তিয়েনআনমেন স্কয়ারের ঘটনা সম্পর্কিত ভিডিও এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে তৈরি ভিডিও সরিয়ে দিয়েছিল প্ল্যাটফর্মটি। পরে মে মাসে নিজেদের ওই নীতিমালাতে পরিবর্তন আনে প্রতিষ্ঠানটি।