অন্য সেবায় ছবি সরাতে দেবে ফেইসবুক

ব্যবহারকারীরা যাতে সহজেই অন্য প্ল্যাটফর্মে ছবি সরিয়ে রাখতে পারে, সে সুযোগটি তৈরি করছে ফেইসবুক। ইউরোপিয়ান গোপনতা আইন এবং নিয়ন্ত্রকদের সমালোচনার পর নতুন এ ফিচার আনার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2019, 03:47 PM
Updated : 3 Dec 2019, 03:47 PM

সোমবার ফেইসবুক জানিয়েছে, আয়ারল্যান্ডে ‘ডেটা পোর্টেবিলিটি’ টুল পরীক্ষা করা শুরু করছে তারা। ওই টুলটির সাহায্যে সরাসরি ফেইসবুক থেকে গুগল ফটোস সেবায় ছবি ও ভিডিও সরিয়ে রাখা সম্ভব হবে। তবে ফেইসবুকের পদক্ষেপ সন্তুষ্ট করতে পারেনি সমালোচকদের। তারা বলছেন, উদ্যোগটি আরও বড় হতে পারত। - খবর নিউ ইয়র্ক টাইমসের।

উল্লেখ্য, ফেইসবুক ডেটা প্রতিযোগিতায় বাঁধা সৃষ্টি ও তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে সমালোচনা করেছিলেন সমালোচকরা।

আপাতত আয়ারল্যান্ডে ফিচারটি পরীক্ষা করতে গুগলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে ফেইসবুক। তবে, প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, জুন নাগাদ অন্যান্য ছবি সেবাদাতা এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানের জন্য ফিচারটি নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে তারা।

ফেইসবুক জানিয়েছে, ব্রাজিল, জার্মানি, ব্রিটেন এবং সিঙ্গাপুরের মতে দেশগুলোর কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলার ফলেই ছবি স্থানান্তরের ফিচার নিয়ে আসতে পেরেছে তারা। এ প্রসঙ্গে এক ব্লগ পোস্টে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “নীতি নির্ধারক, নিয়ন্ত্রক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবি এবং অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, বাস্তব-পৃথিবীতে কাজে দেবে এমন কেস এবং টুল নীতি আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

এদিকে, ২০০৭ সাল থেকেই ডেটা পোর্টেবিলিটি টুল রয়েছে গুগলের এমনটাই জানিয়েছেন এক গুগল মুখপাত্র।

কিন্তু সমালোচকরা এখনও সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাদের ভাষ্যে, ফেইসবুকের ক্ষমতাকে একটা সীমারেখায় আনতে আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গোপনতা আইন, জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশনের হিসেবে ফেইসবুক ও অন্যান্যদেরকে এমনিতেও এই ‘ডেটা পোর্টেবল’ সুবিধা আনতে হত।

এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের ডিজিটাল অধিকার ও নীতিমালার প্রভাষক মাইকেল ভিলে বলেছেন, “অন্য প্ল্যাটফর্মে ডেটা পাঠানোয় গ্রাহক ক্ষমতাটি ফেইসবুকের জন্য হুমকি নয়।”

উল্লেখ্য, ফেইসবুকের বিরুদ্ধে ইউরোপে গোপনতা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ভিলে। তার অভিযোগ ছিল, ফেইসবুক নেটওয়ার্কে সংরক্ষিত অবস্থায় তার যে ডেটা রয়েছে, তাতে প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে না তাকে।

ভোক্তা-অধিকার সংগঠন ইউরোপিয়ান কনজিউমার অর্গানাইজেশনের প্রধান প্রতিযোগিতা কর্মকর্তা অগাস্টিন রেয়না ফেইসবুকের সাম্প্রতিক উদ্যোগটিকে ‘আধাআধি সমাধান’ আখ্যা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে রেয়না বলেছেন, “ফেইসবুকের বাজার অনেক বেশি এককেন্দ্রিক হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে শক্তিশালী নেটওয়ার্কের প্রভাবে ভোক্তাদেরকে ফেইসবুক বাস্তুসংস্থানেই আটকে রাখা। এরকম একটি অবস্থায় ছবি অন্য সেবায় নিতে পারছেন কিনা সেটি পরিবর্তন প্রশ্নে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়।”

ডেটা নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে অনেকদিন ধরেই কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কর্তাব্যক্তিরা। প্রতিদ্বন্দ্বীদের হটিয়ে দিতে অ্যামাজন, গুগল, অ্যাপল এবং ফেইসবুকের মতো সেবাগুলো ডেটা ব্যবহার করে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শীর্ষ অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ন্ত্রক মার্গ্রেথ ভেস্টেগার জানান, ডেটার ব্যবহার অনেকের জন্য কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসতে পারে। “তবে এমনটি হওয়া সম্ভব নয়, যদি ডেটার ব্যবহার শুধু হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া অধিকার এবং প্রতিযোগিতাকে তাড়িয়ে দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়।”