হায় অ্যাপল, তুমিও!

প্রতিটি স্মার্টফোনেই ভলিউম কমিয়ে আনার জন্য ফাংশন দেওয়া আছে। সেটিংসে যাবেন, সেখানে সাউন্ড অপশন খুঁজে বের করবেন এরপর পর্দায় স্লাইডারটি টেনে আওয়াজ কমিয়ে দেবেন। আরও সহজ পদ্ধতি হলো ফোনের পাশে ভলিউম কমানোর বাটন চেপে ধরে রাখা। মোটামুটিভাবে সব ফোনেই হিসাব একই।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2019, 05:43 AM
Updated : 27 Oct 2019, 05:50 AM

ব্যতিক্রম অ্যাপলের আইফোন। সেখানে প্রচলিত এই দুই পদ্ধতি তো আছেই, তার সঙ্গে আছে বিশেষ একটি বাটন যেটি মূহুর্তেই আপনার ফোনটিকে সাইলেন্ট মোডে নিয়ে যাবে। সম্ভবত ব্যস্ত মানুষদের আইফোনে ওই বটনটিরই ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি। মিটিংয়ে ঢুকছেন, সাইল্টে করে নিলেন ফোন। মিটিং শেষে বেরোচ্ছেন, ফের ফোনটিকে ফিরিয়ে আনলেন পুরোনো সেটিংসে। জীবন সহজ!

এই যে সাইলেন্ট মোডের জন্য একটা বাটন বরাদ্দ রাখা, সেটি অন্য যে কোনো মোবাইল ফোন নির্মাতাও তৈরি করতে পারতো এবং এখনও পারে। কিন্তু ওই অ্যাপল ছাড়া আর কারও মাথায় আসেনি যে এই বাটনটি এতো দরকারি হতে পারে।

কারণ, বলা হয়ে থাকে, অ্যাপল ব্যবহারকারীর অভ্যাস যতো কাছ থেকে দেখে সেই ‘দেখার চোখ’ অধিকাংশ প্রযুক্তি নির্মাতার নেই।

এতো কথা বলার কারণ হলো, সেই অতি বুদ্ধিমান অ্যাপলও এমন কাজ সম্প্রতি করে বসেছে যাকে স্রেফ সোজা বাংলায় বলা যেতে পারে ‘বেকুবি’।

সম্প্রতি এসেছে আইওএস ১৩। অ্যাপল প্রতিনিয়তই ডিজাইন নিয়ে গবেষণা করে, এবারও করেছে। সেই গবেষণার অনেকগুলো ফলের একটি হলো মেইল অ্যাপটিতে তারা ডিলিট বাটনটির জায়গা বদলে দিয়েছেন। মানে ওই অ্যাপে যে বাটনটি চেপে মেইল মুছে ফেলা হতো সেই বাটনটি তারা নিয়ে গিয়েছেন অন্যখানে। কোথায়? যেখানে আগে রিপ্লাই বাটনটি ছিল ঠিক সেইখানে।

মাসল মেমরি বলে একটি বিষয় আছে। রাস্তার যেখানে গর্ত আছে, দীর্ঘদিনের অভ্যাসে আপনি নিজের অজান্তেই ওই জায়গাটি এড়িয়ে যান। আপনার বাথরুমে যেখানটায় টুথব্রাশ থাকে সেখান থেকে আপনি ব্রাশটি সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখতে শুরু করুন। দেখবেন, নিজের অজান্তে প্রায় প্রতিদিন সকালে প্রথমে ওই পুরোনো জায়গায় গিয়ে আপনি ব্রাশ খুঁজছেন। এই যে অভ্যাসবশে নিজের অজান্তেই আগের তালে কাজ করে যাওয়া, একেই বলা হয় মাসল মেমরি।

এখন আইফোনের মেইল অ্যাপে ডিলিট বাটন সরিয়ে রিপ্লাইয়ের জায়গায় আনার ফলে কী হচ্ছে? মাসল মেমরিরে ফেরে পড়ছেন ব্যবহারকারী। মেইল পড়া মাত্রই রিপ্লাই দিতে গিয়ে ডিলিট করে ফেলছেন মেইল।

এবিসি নিউজ সর্বপ্রথম বিষয়টি পাঠকের নজরে আনে বৃহস্পতিবার। তারা একগাদা টুইট জুড়ে দিয়েছেন প্রতিবেদনের সঙ্গে।

ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন হার্পারস বাজার-এর সৌন্দর্য পরিচালক জেনা রোজেনস্টাইন তার ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করেছেন- “অ্যাপলের কেন মনে হলো যে নতুন আইওএস-এ ডিলিট বাটনটি আগের রিপ্লাই বাটনটির জায়গায় আনাটা বেশ একটা কাজের কাজ হয়েছে? আমি ক্রমাগত আমার মেইল মুছে ফেলছি।”

রাগবি খেলোয়ার মার্কাস স্মিথও তার ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকে বলছেন- “অ্যাপল, প্লিজ ট্র্যাশ আইকনটির স্থানটি পুনঃবিবেচনা করুন। গত কয় সপ্তাহে আমি অনেক মেইল মুছে ফেলেছি। এলওএল!”

মডেল ব্রিটানি ওয়ার্ড টুইটে ব্রিদ্রুপ করেই বলেছেন- “নতুন ইমেইল অ্যাপ রিডিজাইনে আগের রিপ্লাই আইকনের জায়গায় ট্র্যাশ ক্যান আনার জন্য ধন্যবাদ অ্যাপল!

আমি প্রায় সব মেইল আর্কাইভ করে ফেলেছি।”

এমনি সব টুইট আসছে ক্রমাগত। আর স্রোতের মতো এই অসন্তুষ্টির বাণী আসছে সেই প্রতিষ্ঠানটির সম্পর্কে যাদের বিষয়ে মনে করা হতো তারা ব্যবহারবান্ধব প্রযুক্তি, ফিচার, সফটওয়্যার বা অ্যাপ ডিজাইনে পৃথিবীর সেরা।