বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গুগলের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সান্তা বারবারায় তাদের ল্যাবে তারা একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান করেছে ৩ মিনিট ২০ সেকেন্ডে, যা করতে এখনকার সুপার কম্পিউটারগুলো ১০ হাজার বছরেও শেষ করার সক্ষমতা রাখে না।
কম্পিউটিংয়ের এই গতিকে বলা হচ্ছে কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি, যা অর্জন করতে পেরেছেন বলে গুগলের বিজ্ঞানীদের দাবি।
প্রকাশের আগে গুগলের ওই গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনায় যুক্ত থাকা টেক্সাস ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞানী স্কট অ্যান্ডারসন বলেন, রাইট ভাইরা যে উড়ুক্কুযানে প্রথম উড়েছিলেন, তা সত্যিকার অর্থে ব্যবহারযোগ্য উড়োজাহাজ ছিল না। কিন্তু তারা প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে উড়োজাহাজ তৈরি সম্ভব, আর তারা তা প্রমাণ করতে পেরেছিলেন।
এই কোয়ান্টাম মেশিন, যা কিনা বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ গবেষণার ফসল, তা কাজ করবে আজকের পরিচিত কম্পিউটারের চেয়ে পুরোপুরি ভিন্নভাবে।
বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, এই যন্ত্র একদিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সকে অনেক এগিয়ে নেবে অথবা এখনকার ফাইল এনক্রিপশন ব্যবস্থাকে সহজেই ভেঙে ফেলতে পারবে।
একটি দেশের কম্পিউটার নেটওয়ার্কের এনক্রিপশন ব্যবস্থা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এই এনক্রিপশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সরকার কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানানোর গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিজ্ছে।
গুগলের পাশাপাশি মাইক্রোসফট, ইনটেল, আইবিএমের মত বড় কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরেই কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানানোর গবেষণায় প্রতিযোগিতা করে আসছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে এ খাতের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোতে ৪৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে।
চীন ৪০ কোটি ডলার খরচ করে তাদের কোয়ান্টাম ল্যাব গড়ে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্র সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোয়ান্টাম প্রযুক্তির যতগুলো পেটেন্টের আবেদন করেছে, চীন করেছে তার দ্বিগুণ। ট্রাম্প প্রশাসনও সম্প্রতি এ গবেষণায় ১.২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।