মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে সিআরআইয়ের আয়োজনে ‘ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ’ অনুষ্ঠানের ‘ডিজিটাল ফিউচার অন ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সেশনে একথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের তরুণরাও যাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে বিশেষায়িত জ্ঞান অর্জন করতে পারেন সেজন্য সরকারের আইসিটি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্প থেকে রোবটিকস, আইওটি ও এআই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি বলেন, “এগুলোর ওপর স্পেশালি গুরুত্ব দিয়েছি এবার। এ বিষয়গুলোতে প্রশিক্ষণ ও রিসার্চ ফ্যাসিলিটি করে দিলে এক্সপার্টিজের দিক থেকে আমরা অন্য দেশ থেকে এগিয়ে যাব। এসব বিষয় নতুন, খুব বেশি বিশেষজ্ঞ নেই। নিজেদের উদ্যোগে রিসার্চ করলে এসব সেক্টরে আমাদের সম্ভাবনা আছে।”
এই অনুষ্ঠানে ২৫০ জন তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন। সিআরআইয়ের ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ জয়ী তরুণদের পাশাপাশি এসেছিলেন আইসিটি বিভাগের স্টুডেন্ট টু স্টার্ট-আপ বিজয়ী ও ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডররা।
‘ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ’ অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে ভাগ করা হয়।
রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে মঙ্গলবার সিআরআইয়ের আয়োজনে ‘ডিজিটাল ফিউচার অন ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া তরুণ-তরুণীরা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
এই পর্বটি তিনটি উপভাগে ভাগ করা হয়: ‘ডিজিটাল ফিউচার অব ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’, ‘ভিশন-২০২১ ইন্টার্নশিপ’ এবং ‘জয় বাংলা স্টোরিজ অব ইয়ুথ’ সেশনগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে তরুণদের সুযোগ, প্রশিক্ষণ আর কর্মসংস্থান নিয়ে তরুণ-তরুণীরা সজীব ওয়াজেদ জয়কে খোলামেলা প্রশ্ন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
ভবিষ্যতে চোখ জয়ের
সজীব ওয়াজেদ বলেন, “আমরা ভবিষ্যৎ চিন্তা করছি। এখন যে সফটওয়্যার বা সিস্টেমের উপর যে ট্রেনিং নিচ্ছি তা কিন্তু অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল। এজন্য আমরা ফোকাস করতে চাই যা আমাদের লং টার্ম সহযোগিতা করবে। বিগ ডেটা, আইওটি, রোবটিকস ও মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইন লং টার্মে আমাদের দেশকে আরও ইন্ডিপেনডেন্ট করে দেবে যেন টেকনোলজির দিক দিয়ে আমরা অন্য কারও উপর নির্ভরশীল না হয়ে থাকি।”
‘ডিজিটাল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় দেশের সব স্কুল- কলেজে ওয়াইফাই জোন করা হচ্ছে বলে জানান সজীব ওয়াজেদ জয়।
আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় স্টুডেন্ট টু স্টার্ট আপের ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডররা এই অনুষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তি খাতের প্রশিক্ষণগুলো ঢাকার বাইরে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন।
তথ্য-প্রযুক্তি খাতের প্রশিক্ষণগুলো আরও বেশি ঢাকার বাইরে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্পকে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি চাই, আমাদের আইডিয়া, স্টার্ট আপ, ইনোভেশন নিয়ে সারা দেশে নিয়ে যাওয়া হোক। আমরা চাই, সব উন্নয়ন ঢাকাকেন্দ্রিক যেন না হয়।”
কয়েক দিন আগেই আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সেরা উদ্ভাবনের জন্য আইসিটি বিভাগ তরুণদের ১০টি প্রকল্পকে ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্ট’ দেয়। অনুদান হিসেবে ১০ লাখ টাকা করে পান তরুণ উদ্যোক্তারা।
এটা ভবিষ্যতে আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
‘তরুণরাই পারে’
তরুণদের সামাজিক খাতে নানা উদ্ভাবনের জন্য সিআরআই থেকেও দেওয়া হচ্ছে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’।
রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে মঙ্গলবার সিআরআইয়ের আয়োজনে ‘ডিজিটাল ফিউচার অন ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
ইয়াং বাংলার প্ল্যাটফর্ম থেকে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাড়ে তিন হাজার তরুণের ইন্টার্নশিপ হয়েছে বলে জানান ইয়াং বাংলার সহকারী সমন্বয়ক ইসরাত ফারজানা তন্বী।
তরুণদের ইন্টার্নশিপের সুযোগ করে দিতে নিজেও ‘পুশ আপ’ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
‘বাঙালির পরিচয়ই মুছে দিতে চেয়েছিল ওরা’
আওয়ামী লীগ সরকারের আগে ক্ষমতায় আসা সবগুলো সরকার বাঙালির সাংস্কৃতিক পরিচয় ‘মুছে দিতে চেয়েছিল’ বলে মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র জয়।
এক তরুণ প্রশ্ন করেন, সংস্কৃতি খাতে জাগরণের কথা বলেও সরকারের বাজেট কেন এক শতাংশেরও কম?
জবাবে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, “সরকারের আয় বেড়েছে। সে বাজেটের ওয়ান পারসেন্ট ভালো অঙ্ক। আমার মনে হয় না, বাজেটের দিক দিয়ে সমস্যা আছে।”
এই সেশনেই এক তরুণীর প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্রটির নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সেই তরুণীকে জয় বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার সংস্কৃতির উপর অনেক জোর দেন। যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিজেদের আইডেনটিটিটা ভুলতে না পারে।”
সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে এক তরুণের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ফ্রিডম অব স্পিসের একটা লিমিট আছে। যখন আমি অন্য কারও ক্ষতি করতে যাব, সেটা তো আমরা হতে দিতে পারি না। সে কারণে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছি। সাইবার বুলিং, সাইবার টেররিজম না হয় সেগুলোও মোকাবেলা করতে হবে।”
সাইবার ক্রাইম ঠেকাতে তরুণদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, “সরকার একা সব পারবে না। এজন্য আপনাদের সহযোগিতাও প্রয়োজন।”