“নোকিয়ার লক্ষ্য সাশ্রয়ী মূল্যে প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা”

গেল সপ্তাহেই নোকিয়া বাংলাদেশের বাজারে একযোগে সাতটি ফোন উন্মোচন করলো। ফিচার ফোনের যুগে বৈশ্বিক বাজার নিয়ন্ত্রক এই ব্র্যান্ডটি এখন নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছে স্মার্টফোনের বাজারে নিজের অবস্থান তৈরি করতে।

হাসান বিপুলবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 08:01 AM
Updated : 18 Sept 2019, 11:18 AM

সদ্য ঘোষিত সাতটি ফোনের মধ্যে দুটি ফোন অ্যান্ড্রয়েড চালিত। মধ্যম শ্রেণিভূক্ত এই ফোনগুলো বিশ্ববাজারেও নতুন। এর পাশাপাশি রয়েছে ভিন্ন ধরনের আরও পাঁচটি ফোন। হঠাৎ করেই এতোগুলো মডেলের উন্মোচন মোবাইল ফোন বাজারে কি নতুন কোনো ইঙ্গিত দেয়? জোরেসোরে ফিরে আসতে চাইছে নোকিয়া? এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছিলাম রাভি কানওয়ারের সঙ্গে। তিনি নোকিয়া ব্র্যান্ডের মালিক প্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবালের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান।

নোকিয়া দুটি অ্যান্ড্রয়েড স্মর্টফোন উন্মোচন করেছে, নোকিয়া ৭.২ এবং ৬.২।

নোকিয়া দুটি অ্যান্ড্রয়েড স্মর্টফোন উন্মোচন করেছে, নোকিয়া ৭.২ এবং ৬.২। হার্ডওয়্যার বিবেচনা করলে এই ফোনদুটি মধ্যম শ্রেণির মধ্যেই পড়ে। তাহলে কি শীর্ষশ্রেণির স্মার্টফোন নিয়ে আপাতত ভাবছে না নোকিয়া? রাভি বললেন, “আমাদের নজর আসলে সাশ্রয়ী মূল্যের মধ্যেই ফ্ল্যাগশিপ ফোনের অভিজ্ঞতা দেওয়া। প্রযুক্তিকে সাধারণের আওতার মধ্যে নিয়ে আসার বিষয়টি বরাবরই নোকিয়ার দর্শন ছিল। নতুন ফোন দুটিতে যে ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো কিন্তু প্রিমিয়াম ফোনের অভিজ্ঞতাই দেয়।আর পিওরভিউ ৯ বর্তমানে নোকিয়ার ফ্ল্যাগশিপ ফোন। তবে, ভবিষ্যতের ফোন লাইনআপ সম্পর্কে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। কেবল এইটুকু বলা যায় যে, সাশ্রয়ী মূল্যের মধ্যে কালজয়ী নর্ডিক নকশায় তৈরি ফোন যেন সবার সাধ্যের মধ্যে থাকে সেইটিই আমাদের লক্ষ্য।”

স্মর্টফোনের বাইরে নতুন একটি মডেল অনেকেরই নজর কেড়েছে- ‘৮০০ টাফ’। নাম শুনেই খানিকটা ধারণা করা যায় কঠিন পরিবেশে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে এই ফোন। কিন্তু এটি স্মার্টফোন নয়। ফলে, রোমঞ্চকর পরিবেশে ব্যবহারের জন্য নতুন অ্যাপ ব্যবহার করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তাই না?

আউটডোর অ্যাডভেঞ্চারের জন্য নোকিয়া ৮০০ টাফ।

রাভি বললেন, নোকিয়া ৮০০ টফের উপরে ১৯৮ লুমেন ক্ষমতার একটি টর্চ লাইট রয়েছে যেটি তার ভাষায় অন্ধকার পরিবেশে ফোনটিকে ফ্ল্যাশলাইট হিসাবে ব্যবহার করার জন্য “দুর্দান্ত”। এতে আছে গুগল অ্যাসিস্টেন্ট এবং অনুবাদ টুল। ফলে ভ্রমণ করার সময় আলাপচারিতা অন্য ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন। এতে গুগল ম্যাপস ব্যবহার করা যাবে। ফলে আউটডোর অ্যাডভেঞ্চারে তার ভাষায় “ভালোই সহায়ক” হবে এটি।

যে প্রশ্নটি অনেকের মনেই সম্ভবত ঘুরপাক খাচ্ছে সেটি হলো নোকিয়ার আগামী দিনগুলো কোন দিকে যাচ্ছে। আর পাঁচ বছর পর কোথায় থাকবে নোকিয়ার অবস্থান? রাভি স্বীকার করলেন যে, স্মার্টফোনের বাজার অসম্ভব দ্রুত বদলায় আর চ্যালেঞ্জিংও। এর মধ্যেই কয়েকটি নির্দ্রিষ্ট পয়েন্ট ধরে তিনি ব্যখ্যা করলেন তার উত্তর। প্রথমত নোকিয়া অল্প সময়ের মধ্যেই সব শ্রেণির ফোন বাজারে এনেছে। দ্বিতীয়ত প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই মার্কিন অপারেটরদের হাত ধরে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারটিতে প্রবেশ করেছে। আর তৃতীয়ত এই ব্র্যান্ডটি বার ব্যবসার পরিসর এমনভাবে বাড়াচ্ছে যেখানে স্থায়ীত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আর অ্যান্ড্রয়েড বাজার? সেখানে নোকিয়া বলতে আপনি কী বোঝেন?

“আমরা ভোক্তাদের কাছে একটি অনন্য অ্যান্ড্রয়েড অভিজ্ঞতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি – ফোনের জন্য তিন বছরের জন্য গ্যারান্টি থাকছে। প্রতি মাসেই আসছে নিরাপত্তা আপডেট। সেইসঙ্গে দুই বছরের জন্য ওএস আপডেটও পাওয়া যাবে।”

“নোকিয়া এই মুহূর্তে একমাত্র স্মার্টফোন নির্মাতা যারা পুরো লাইনআপজুড়ে সর্বশেষ সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড দিচ্ছে, সেটা অ্যান্ড্রয়েড গো থেকে অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান পর্যন্ত প্রযোজ্য। আর এখন আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি অ্যান্ড্রয়েড ১০-এর দিকে।