৪৭ দিনের যাত্রা শেষে গত শনিবার প্রথম প্রহরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ছিল চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারটির। কিন্তু চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরে থাকতে বিক্রমের সঙ্গে ইসরোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
চাঁদ ঘিরে ঘুরতে থাকা চন্দ্রযানের অরবিটার হারিয়ে যাওয়া বিক্রমের একটি থার্মাল ইমেজ পাঠালে জানা যায় চাঁদের পিঠে বিক্রমের অবস্থান।
এখন পর্যন্ত সফলতা না পেলেও ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টার কথা নিয়মিত টুইট করে জানাচ্ছে ইসরো।
কীভাবে ল্যান্ডারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে ইসরো, তা তুলে ধরেছে টাইমস অফ ইন্ডিয়া মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে।
ঠিক কোন তরঙ্গে পাঠানো সঙ্কেত বুঝতে পারে বিক্রম, তা জানে ইসরো। প্রতিদিনই সেভাবে বিভিন্ন সঙ্কেত পাঠিয়ে যাচ্ছে তারা।
বেঙ্গালুরুর কাছে মহাকাশ নেটওয়ার্ক কেন্দ্রে বসানো ৩২ মিটারের একটি অ্যান্টেনা ব্যবহার করা হচ্ছে এ কাজে।
পাশাপাশি চাঁদ ঘিরে ঘুরতে থাকা চন্দ্রযানের অরবিটার দিয়েও বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
কিন্তু বিক্রম কীভাবে সাড়া দেবে?
পৃথিবী অথবা অরবিটার থেকে পাঠানো সঙ্কেত গ্রহণে ল্যান্ডারের উপরে গম্বুজসদৃশ কাঠামোতে রয়েছে তিনটি ট্রান্সপন্ডার আর একটি অ্যান্টেনা। এর মাধ্যমে সঙ্কেতের পাঠোদ্ধার করে এর ফিরতি জবাবও দিতে পারবে বিক্রম।
তবে পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর গত ৭২ ঘণ্টায় একবারও কোনো বার্তা পাঠায়নি বিক্রম।
যদি চাঁদের পিঠে আছড়ে পড়ে ল্যান্ডারটি, তবে এর অ্যান্টেনা কতটা কার্যকর রয়েছে সেটা এখনও জানতে পারেনি ইসরো।
পুরো সিসটেমটি চালনায় বিক্রমের যে জীবনীশক্তি প্রয়োজন, সেটার জোগানই বা হবে কীভাবে?
এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নয় যোগাযোগ করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি বিক্রমের রয়েছে কি না। সেটা বোঝার জন্য এখনও হাতে আসা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে চলেছে ইসরো।
মিশনের শুরুতেই ইসরো জানিয়েছিল, চাঁদের দক্ষিণের ওই অন্ধকার অংশে পৌঁছানোর বিক্রম এক চন্দ্রদিন পর্যন্ত সূর্যের আলো পাবে; যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।
এখন হাতে থাকা আরও কয়েকটি দিন বিক্রমের সাড়া পেতে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে পারে ইসরো। অথবা যদি ল্যান্ডারটির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে হয়ত এরমধ্যেই বিক্রমকে খোঁজায় হাল ছাড়ার ঘোষণা দিতে পারে তারা।
কারণ ১৪ দিনের পর থেকে চাঁদে শুরু হবে দীর্ঘ শীতের রাত। যদি বিক্রমের সফট ল্যান্ডিং সফল হত, তাহলেও এই বৈরী আবহাওয়ায় সিসটেমটির টিকে থাকা মুশকিলই হত।