ফেইসঅ্যাপ: ভাইরাল অ্যাপের দখলে ১৫ কোটির তথ্য

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি, তাই না? একদম ভুল। আপনার ফেইসবুক ওয়ালে চোখ মেলুন। দেখার চেষ্টা করুন ফেইসঅ্যাপ ব্যবহার করেছেন আপনার কতজন বন্ধু।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 08:34 AM
Updated : 19 July 2019, 03:09 AM

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভাইরাল হয়েছে ফেইসঅ্যাপ। ভবিষ্যতে গ্রাহকের চেহারা কেমন হবে তার একটি ধারণা  দিয়ে থাকে অ্যাপটি।

অ্যাপটির মাধ্যমে চেহারার অভিব্যক্তি, তাকানো এবং অনেক বছর পর বৃদ্ধ বয়সে চেহারা কেমন হবে তা দেখতে পারেন গ্রাহক। কিন্তু ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহক অ্যাপটিকে তার ছবি ও নামের অ্যাকসেসও দিচ্ছেন। আর এই ডেটাগুলো যেকোনো উদ্দেশ্যে যতদিন ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারবে ফেইসঅ্যাপ।

অ্যাপটিকে এসব ডেটা ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছেন গ্রাহক নিজেরাই। অ্যাপ অ্যানি’র দেওয়া তথ্যমতে গুগল প্লে স্টোরে ফেইসঅ্যাপ ডাউনলোড হয়েছে ১০ কোটির বেশি। আর ১২১টি দেশে আইওএস অ্যাপ স্টোরে শীর্ষ অ্যাপ এটি। সব মিলিয়ে হুজুগে এই অ্যাপ ইতোমধ্যেই ১৫ কোটি ব্যক্তির তথ্য হাতিয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফোর্বস সাময়িকী। এসব তথ্যের মধ্যে নাম-ঠিকানা আর তথ্য মালিকের ফেইসবুকে রাখা ছবি রয়েছে। 

ফেইসঅ্যাপের শর্ত অনুযায়ী গ্রাহক অ্যাপটিকে একটি রয়ালটিবিহীন লাইসেন্স দিচ্ছেন যার মেয়াদ কখনও শেষ হবে না এবং এটি প্রত্যাখ্যানও করা যাবে না। আর এই লাইসেন্স দিয়ে তাদের ইচ্ছামতো যে কারও সামনে সবকিছু করতে পারবে তারা।

বিষয়টি হয়তো ঝুঁকিপূর্ণ কিছু নয় এবং ডেটাগুলো হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামাজন সার্ভারেই থাকবে। কিন্তু তারা যা খুশি তাই করতে পারবে এমন একটি লাইসেন্স তাদের কাছে থাকছে। এর মানে এমন নয় যে, অ্যাপটির রাশিয়ান মূল প্রতিষ্ঠান ওয়্যারলেস ল্যাবস আপনার ডেটা রাশিয়ান নিরাপত্তা বাহিনীকে (এফএসবি) দিয়ে দেবে। তারপরও এটির কিছু প্রভাব থেকে যেতে পারে।

ফোনঅ্যারেনার পিটার কস্তাডিনভ বলেন, “হয়তো আপনার চেহারা মস্কোর কোনো বিলবোর্ডেই সীমাবদ্ধ থাকবে, কিন্তু খুব সম্ভবত আপনার চেহারা এআই ফেসিয়াল-রিকগনিশন অ্যালগরিদমকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে।”

ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি আপনার কাছে দুশ্চিন্তার কিনা তা একেবারেই আপনার নিজের সিদ্ধান্ত।

কিন্তু এর আগে ফেইসবুকের ভাইরাল অ্যাপগুলো নিয়ে আমরা যা জানতে পেরেছি তা হলো, এর মাধ্যমে যে উদ্দেশ্যে ডেটা নেওয়া হয় তা শুধু সে উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হয় না। আর এই ডেটাগুলো সবসময় নিরাপদে ও গোপনে রাখা হয়, বিষয়টা এমনও নয়।

একবার ক্লাউডে কিছু আপলোড করা হলে এটির কোনো নিয়ন্ত্রণ আর গ্রাহকের কাছে থাকে না। এক্ষেত্রে গ্রাহক বৈধ লাইসেন্স দিয়েছেন কিনা তা বিচার করা হয় না।

রকস্পেস-এর সাবেক ব্যবস্থাপক রব ল গিস বলেন, “ফেইসঅ্যাপকে কাজ করাতে আপনাকে আপনার সব ছবির অ্যাকসেস দিতে হবে। এমনকি সিরি এবং সার্চের অ্যাকসেসও দিতে হবে। আর এটিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করারও অনুমতি দিতে হবে। তাই আপনি যখন এটি ব্যবহার করছেন না, এটি আপনাকে ব্যবহার করছে।”

আর এই তথ্য নিয়ে কী হতে পারে তার একটি উদাহরণ আপনার চোখের সামনেই আছে। চোখ বুলিয়ে নিন কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ঘটনায়।