অনুকরণ নয়, নতুন কিছু উদ্ভাবন করুন: জয়

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রতিবেশী দেশগুলো কি করছে, তাতে নজর না দিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করতে তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2019, 07:48 AM
Updated : 21 April 2019, 07:48 AM

রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং সামিটের চতুর্থ আসর উদ্বোধন করতে এসে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের উদ্দেশ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, “দেশকে কিভাবে ডিজিটাইজড করতে হবে, এ বিষয়ে কোনো দেশেরই কোনো পরিকল্পিত রূপকল্প ছিল না।কোনো কোনো দেশ এটাকে অর্গানিক্যালি করেছে। প্রতিটি দেশের সমস্যা ও সম্পদ একেবারে আলাদা। তাই আপনাকে থাকতে হবে নির্দেশকের ভূমিকায়। আর আমরা তা সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি।

“তাই আপনাদের প্রতি আমার বার্তা হল, আপনারা নতুন কিছু উদ্ভাবন করুন, নতুন প্রযুক্তি খুঁজুন।  আপনারা কেউ অনুকরণ করবেন না, উদ্ভাবন করুন। আর এটাই আমার লক্ষ্য আর উদ্দেশ্য।”

জয়ের আগে বক্তব্য দিতে এসে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ভারত এবং ফিলিপিন্সের বিপিও খাত নিয়ে তুলনামূলক আলোচনায় বলেন, “আজকে ভারত ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে বিপিও সেক্টরে। ফিলিপিন্সে ১০ লক্ষ তরুণ আয় করছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার। আমাদের এখানে ৫০ হাজার তরুণ আয় করছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার। মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের যে টার্গেট দেবেন, আমরা সেই টার্গেটে পৌঁছাতে কাজ করব।”

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতার না নামার আহ্বান জানান সজীব ওয়াজেদ জয়।

“আউটসোর্সিং খাতে তারা এখন সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ওদের সঙ্গে এখনই লড়াই করতে পারব না। সেটা আমাদের জন্য সত্যি একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমার বিশ্বাস, এটা আমাদের করতেও হবে না। আমাদের বিপিও ইন্ডাস্ট্রিকে মুখোমুখি বা দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। দরকার নেই তাদের অনুকরণ করার।”

জয় বলেন, “আমি বিপিও সেক্টরে কাজ করা তরুণ তরুণীদের নিয়েও গর্ববোধ করি। এই স্মার্ট তরুণরা ভবিষ্যৎ এখন নিজেরাই গড়ে নিচ্ছে নিজেদের মেধার বলে।  তারা এখন সরকারি চাকরির অপেক্ষা করছে না।  গতানুগতিক চাকরির জন্য কিন্তু তারা বসে নাই। তারা তাদের পেশার নতুন ক্ষেত্র তৈরি করেছে, যা আগে কখনও বাংলাদেশ ছিল না।”

প্রযুক্তির বাজারে আজকের তারুণ্য আগামীতে মূল চালিকাশক্তি হবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “আমার স্বপ্ন, আগামীতে হাই-টেক সেক্টরে কাজ করবে বাংলাদেশের তরুণরা।  চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অংশ নয়, নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানেও আসবে বাংলাদেশ।”

অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার দেশের বাণিজ্যিক সেবা খাতকে এবার বিপিও সুবিধা নেওয়ার আহ্বান জানান।

“আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিপিও খাতের সেবা নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ব্যাংকিং ও টেলিকম খাতসহ আরও অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তা নিচ্ছে না।  আমি বলছি, এখন বিপিও খাতের সে সক্ষমতা  তৈরি হচ্ছে। ”

এছাড়াও বিপিও খাতকে এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও নজর রাখতে হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) আয়োজিত বিপিও সামিটের চতুর্থ আসরের ‍উদ্বোধনী দিনে এসেছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ডাক ও টেলিকম সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক, হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম ও বাক্যর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ।

এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর। আয়োজনে অংশীদার হিসেবে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি (বিডব্লিউআইটি), আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ)।