ওই নিলামে অন্তত পাঁচজন লোক অংশ নেন, যাদের মধ্যে ওই অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেলও ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংবাদ সাইট ইনকুইজিটর-এর প্রতিবেদনে।
এমন এক ব্যক্তি ওই নিলামে জয়ী হয়েছেন যার ইতোমধ্যেই স্ত্রী আছেন আট জন। নিলামে তোলা শিশুর বাবাকে তিনি দিয়েছেন পাঁচশ’ গরু, দুটি বিলাসবহুল গাড়ি, দুটি বাইক, একটি নৌকা, একাধিক মোবাইল ফোন আর নগদ ১০ হাজার ডলার।
নারীবাদী যে বিষয়গুলোকে কেবল আফ্রিকার নারীদেরই মোকাবেল করতে হয় সে বিষয়সংশ্লিষ্ট আন্দোলনকে এক কথায় আফ্রিকান ফেমিনিজম বলে চিহ্নিত করা হয়। এ বিষয়ে অন্যতম সরব সংগঠন `আফ্রিকানফেমিনিজিম’। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বুধবার এক টুইটে বলা হয়, “নভেম্বরে দক্ষিণ সুদানের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ের জন্য ফেইসবুকে ডাকা নিলামে সর্বোচ্চ প্রস্তাবকারীর কাছে বিক্রি করা হয়েছে আর দক্ষিণ সুদানের এক ব্যবসায়ী অন্য চারজনকে হারিয়ে এ নিলাম জিতে নিয়েছেন- অন্য চারজনের মধ্যে সুদান সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আইনজীবী ফিলিপস অ্যানিয়াং এনগং বলেন, ভাইরাল হওয়া ফেইসবুক পোস্টটি “সবচেয়ে বড় শিশু নিপীড়ন, পাচার ও কোনো মানুষকে নিলামে উঠানোর উদাহরণ।”
এর জন্য ফেইসবুকসহ অন্য যারা জড়িত এনগং তাদের সবাইকে দায়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন বলে আইএএনএস-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মানবাধিকারবিষয়ক অলাভজনক সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল-এর দক্ষিণ সুদান বিভাগও শিশুটির নিলামের জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করেছে। সেইসঙ্গে এই ঘটনাকে আধুনিক যুগের দাসপ্রথার সঙ্গে তুলনা করেছে তারা।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাম সাউথ সুদান-এর পরিচালক জর্জ অটিম বলেছেন, “প্রযুক্তির এই বর্বর ব্যবহার আধুনিক সময়ের দাসপ্রথার দৃষ্টান্ত।”
“এই সময়ে এসে একজন শিশুকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমে বিক্রি করা যায় তা অবিশ্বাস্য।”
২০১৫ সালে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে বলা হয় আফ্রিকায় দক্ষিণ সাহারার পাশের অঞ্চল বা সাব-সাহারান আফ্রিকা-তে প্রায় ৪০ শতাংশ মেয়েকে ১৮ বছরের আগেই বিয়ে দেওয়া হয়। মেয়েদের বাল্যবিয়ে প্রথার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে ১৫টিই এই অঞ্চলের।
কিছু কিছু দেশে এই হার অসম্ববরকম বেশি, যেমন নাইজারে ৭৭ শতাংশ আর শাদে ৬০ শতাংশ। ২০৫০ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ের শিকার মেয়ের সংখ্যা দ্বিগুণ হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।