অসাদাচরণের অভিযোগ: ফ্লিপকার্ট প্রধানের পদত্যাগ

“গুরুতর ব্যক্তিগত অসদাচারণ”-এর অভিযোগে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন ওয়ালমার্ট অধীনস্থ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ফ্লিপকার্ট গ্রুপ-এর প্রধান নির্বাহী বিনি বানশাল। 

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2018, 08:47 AM
Updated : 14 Nov 2018, 08:47 AM

যৌন নিপীড়ন নিয়ে এই অসাচারণের অভিযোগ তোলা হয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে রয়টার্স। এক বছরেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক মাধ্যমে #মিটু প্রচারণার মাধ্যমে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়। সম্প্রতি ভারতেও এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা তুলে ধরার নজির মিলেছে বাংলাদেশেও। 

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম আর এর মালিক প্রতিষ্ঠান ফ্লিপকার্ট গ্রুপ এবং এই পুরো গ্রুপের মালিক প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্ট- দুই পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, “গুরুতর ব্যক্তিগত অসদাচরণের অভিযোগ নিয়ে ফ্লিপকার্ট আর ওয়ালমার্ট মিলে একটি স্বাধীন তদন্ত করার পর বানশাল পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।” তবে বানশাল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। 

প্রতিষ্ঠানদুটির পক্ষ থেকে বলা হয়, “তিনি (বানশাল) এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, আমাদের (ফ্লিপকার্ট ও ওয়ালমার্ট) পুরোপুরি ও সেচ্ছায় এই তদন্ত করার দায়িত্ব রয়েছে।” এই তদন্তে দেখা গেছে বানসালের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ত্রুটি ছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বিনির বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর করা দাবি সমর্থনে তদন্তে কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি, সেইসঙ্গে এই বিচারে অন্য ত্রুটিগুলোও বলা হয়েছে, বিশেষ করে ওই পরিস্থিতিতে বিনি কীভাবে সাড়া দিয়েছেন তা নিয়ে স্বচ্ছতার অভার আছে। এ কারণে আমরা তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিয়েছি।”

“প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকে করে এখন পর্যন্ত বিনি ফ্লিপকার্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো থেকে ক্ষোভ সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে আর তাই বিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদেরকে পাঠানো এক ইমেইলে বানশাল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। সেইসঙ্গে এ অভিযোগগুলো তাকে “স্তব্ধ” করেছে বলেও দাবি তার। তিনি বলেন, “এই অভিযোগগুলো আমাকে স্তব্ধ করেছে আর আমি এগুলো অস্বীকার করি। যাইহোক, তদন্তে বিচারের ত্রুটিগুলো আনা হয়েছে, বিশেষ করে স্বচ্ছতার অভাব।”

চলতি বছর মে মাসে ফ্লিপকার্টকে কিনে নেয় ওয়ালমার্ট। কয়েক মাসের মধ্যে নির্বাহী পদ থেকে সরে আসার কথা ভাবছিলেন বানশাল, তবে দায়িত্ব হস্তান্তরের এই সময়টাতে তিনি থাকতে চেয়েছিলেন বলে আইএএনএস-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বানশাল আরও বলেন, “আমার পরিবার ও আমার জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জিং সময়। এই অভিযোগগুলো আমার প্রতিষ্ঠান ও দলের ক্ষোভের কারণ হতে পারে এটি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতির আলোকে, আমি মনে করি চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী পদ থেকে সরে আসা সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ।” তবে প্রতিষ্ঠানটির একজন শেয়ারধারী আর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে তিনি থাকছেন বলেও জানান।

বানশাল পদত্যাগের পর আগের পরিকল্পনা আরও দ্রুত বাস্তবায়ন করছে গ্রুপটি। ফ্লিপকার্ট ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের প্রধান নির্বাহী কল্যান কৃশনামুরথি গ্রুপটির প্রধান নির্বাহী হবেন।