নতুন প্রজন্মের অ্যাপল ওয়াচ উন্মোচন করলো মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল।
Published : 13 Sep 2018, 08:00 PM
১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১১ টায় স্টিভ জবস থিয়েটারে শুরু হওয়া অ্যাপল ইভেন্টে অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪ নামের এই স্মার্টওয়াচ উন্মোচন করেন অ্যাপলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা জেফ উইলিয়ামস।
অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪-এ আনা ওয়াচওএস ৫-এ রয়েছে উন্নত কার্যক্ষমতা ও যোগাযোগ ফিচার। এর সঙ্গে আনা হয়েছে নতুন একটি অ্যাকসেলোমিটার আর জাইরোস্কোপ, যোগ করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা যা অ্যাপলের ভাষায় “বৈপ্লবিক”। এতে থাকা হার্ট রেইট সেন্সর এর নতুন ইসিজি অ্যাপ ১ ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম বা ইসিজি করতে সক্ষম, আর এই প্রযুক্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ অধিদপ্তর এফডিএ।
ওয়াচওএস ৫-এর মাধ্যমে অ্যাপল ওয়াচ থেমে থেমে ব্যাকগ্রাউন্ডেই হৃদস্পন্দন মাপে আর যদি কোনো অস্বাভাবিক স্পন্দন পায় তবে একটি ব্যবহারকারীকে একটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে তা জানাতে সক্ষম।
উইলিয়ামস বলেন, “মানুষের জীবনে অ্যাপল ওয়াচ একটি প্রয়োজনীয় অংশ হয়ে ওঠায় আমরা আনন্দিত।”
যদি এই ওয়াচ বুঝতে পারে যে ব্যবহারকারী পড়ে গিয়েছেন, তাহলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরুরী সেবায় কল করবে ও ব্যবহারকারীর অবস্থানের ঠিকানা পাঠিয়ে দেবে। উইলিয়ামস বলেন, “এটি এমন একটি ফিচার যা আপনার কখনও দরকার হোক তা আমরা আশা করি না, কিন্তু এটি আছে তা জানা আসলেই ভালো লাগার।”
এছাড়াও এই ওয়াচে গ্লুকোজ পর্যবেক্ষণ অ্যাপ ডেক্সকম বা প্রতিদিনের কাজের উন্নতি দেখানো অ্যাপ স্ট্রেকস-এর মতো থার্ড-পার্টি অ্যাপগুলো আরও বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবে।
অ্যাপল অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪-এর স্ক্রিনের আকার বাড়িয়েছে বলে জানান উইলিয়ামস। এই সিরিজে আনা নতুন দুই ওয়াচই আগের সংস্করণের চেয়ে পাতলা ও হালকা বলে জানান তিনি।
উইলিয়ামস বলেন, “এর সব কিছুই শুরু হয় চমৎকার নতুন একটি ডিসপ্লে দিয়ে। আমরা স্ক্রিনটকে কিছুটা ডান পাশের দিকে সরিয়েছি আর ধারগুলো ওয়াচের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে বাকিয়ে দিয়েছি।”
অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪-এর জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে অর্ডার নেওয়া শুরু হবে। শুধু জিপিএসযুক্ত ওয়াচটি ২৬টি দেশে আর জিপিএস-এর সঙ্গে সেলুলার সংযোগ নেওয়ার সুবিধা থাকা ওয়াচটির ১৬টি দেশে পাওয়া যাবে। দুটি মডেলই ২১ সেপ্টেম্বর থেকে বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল। শুধু জিপিএস যুক্ত ওয়াচটির দাম শুরু হবে ৩৯৯ ডলার থেকে আর অন্যটির ক্ষেত্রে অংকটা ৪৯৯ ডলার। গ্রাহকদের জন্য আরও সহজলভ্য করতে আনা অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৩ এর দাম শুরু হবে ২৭৯ ডলার থেকে।
৪০মিলিমিটার আর ৪৪ মিলিমিটার- এই দুই আকারে আনা হয়েছে অ্যাপল ওয়াচ সিরিজ ৪। এর স্পিকার আগের ওয়াচের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি শব্দ দিতে সক্ষম, পরিবর্তন করা হয়েছে এর মাইক্রোফোনের অবস্থান। এই ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়েছে নতুন প্রজন্মের এস৪ চিপ, এর সঙ্গে রাখা হয়েছে ৬৪-বিট ডুয়াল কোর প্রসেসর। আগের মতো একইরকম ব্যাটারি সেবা দিয়ে ডিভাইসটি আগের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে কাজ করবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল।
ইউজার ইন্টারফেইসের ক্ষেত্রে নতুন এই ওয়াচের ডিসপ্লেতে অ্যাপ আইকন আর ফন্টগুলো আগের চেয়ে আরও বড় দেখাবে ও সহজে পড়া যাবে।
এই ওয়াচে আনা ওয়াচ-টু-ওয়াচ সংযোগ ওয়াকি-টকি’র মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা মাত্র একটি ট্যাপের মাধ্যমে তাদের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। এই প্রযুক্তিকে বিশ্বব্যাপী ওয়াইফাই বা সেলুলার সংযোগের মাধ্যমে যোগাযোগের পুরোপুরি নতুন এক মাধ্যম হিসেবে আখ্যা দিয়েছে টেক জায়ান্টটি।