মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার পৃষ্ঠা এবং একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ।
Published : 27 Aug 2018, 04:41 PM
এসব পৃষ্ঠা পর্যালোচনার পর ‘বিদ্বেষমূলক এবং মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানো ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে সোমবার ফেইসবুকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সোমবার ফেইসবুকের এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়, “বিশেষ করে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লায়িংসহ বার্মার ২০ জন ব্যক্তি ও সংগঠন এবং সেনাবাহিনী পরিচালিত মাইওয়াডি টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে আমরা ফেইসবুকে নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছি।
“আমরা ১৮টি ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট, একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট এবং ৫২টি ফেইসবুক পৃষ্ঠা সরিয়ে ফেলছি।”
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্কিং সাইট আরও জানিয়েছে, ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানোয় জড়িত ৪৬টি পৃষ্ঠা এবং ১২টি অ্যাকাউন্ট তারা এরই মধ্যে সরিয়ে ফেলেছে।
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিয়ে তিক্ত সমালোচনামূলক পোস্টের স্রোত সামাল দিতে ফেইসবুক ব্যর্থ হয়েছে বলে কিছুদিন আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
এর একদিন পর ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্বীকার করে এক বিবৃতিতে বলে, “মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতা যন্ত্রণাদায়ক আর আমরা ফেইসবুকে ভুল তথ্য আর ঘৃণামূলক বিবৃতি ঠেকাতে খুবই ধীর গতির।”
গতবছর অগাস্টের শেষভাগে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটের এক বছর পূর্তিতে সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া ছাড়াও সেখানে স্থলমাইনও ব্যবহার করেছে সেনাবাহিনী। এছাড়া হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, জোরপূর্বক অনাহারে রাখা এবং দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনাও সেখানে ঘটানো হয়েছে।
গত জুনে অ্যামনেস্টির এক প্রতিবেদনে (উই উইল ডেস্ট্রয় এভরিথিং) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর দমন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ১২ জনের নাম উঠে আসে, যাদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লায়িং রয়েছেন।
সংগঠনটি এদেরকে আটক করে জবাবদিহিতার আওতায় আনার সুপারিশ করেছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে তাদেরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হাজির করা এবং ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য তাদের অপরাধের তথ্যপ্রমাণ সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি খুঁজে বের করার সুপারিশ করেছে অ্যামনেস্টি।
এছাড়া রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নিধনযজ্ঞের জন্য দায়ীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচ দেশের ১৩২ জন আইনপ্রণেতা।