সফটওয়্যার যাচাই ও গুণগত মান নির্ণয়ে আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন সেন্টার উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের আরেক ধাপ অগ্রগতি হল।
Published : 26 Jul 2018, 09:06 PM
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে এই সেন্টার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয়।
একইসঙ্গে ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে এক হাজার উদ্ভাবনী পণ্য ও সেবা তৈরিতে উদ্যোক্তাদের জন্য ‘অ্যাকসেলেরেটর’ এবং হ্যাকিং প্রতিরোধে ‘কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম ল্যাব’ও উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে আইসিটি বিভাগ এ তিনটি সেবা চালু করেছে।
অনুষ্ঠানে জয় বলেন, “আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে আইসিটি ডিভিশনের মাধ্যমে এই তিনটি বিষয় আমরা উদ্বোধন করলাম। বাংলাদেশকে আরেক ধাপ আমরা এগিয়ে নিয়ে গেলাম ডিজিটাল বাংলাদেশে।”
“এখন আমরা বাংলাদেশেই আমাদের আইসিটি মিনিস্ট্রি থেকে করে দিতে পারি। এই ল্যাব এখন আছে। এই সার্টিফিকেশন অথরিটি এখন আছে।”
সফটওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে দেশের সরকারি পর্যায়ে তৈরি ও কেনা সফটওয়্যার, মোবাইল অ্যাপ, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ইত্যাদির মান পরীক্ষা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আইসিটি বিভাগ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এ সেন্টারের মাধ্যমে তিনটি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের মানের পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। আরও চারটি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের পরীক্ষা চলমান।
ভবিষ্যতে এ সেন্টারের মাধ্যমে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের মান পরীক্ষারও পরিকল্পনা রয়েছে আইসিটি বিভাগের।
বেলা সোয়া ৩টার দিকে আইসিটি বিভাগে এসে সজীব ওয়াজেদ জয় প্রথমেই উদ্যোক্তাদের জন্য ‘অ্যাকসেলেরেটর’ উদ্বোধন করেন।
“আমি চাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশে নতুন নতুন আইটি কোম্পানি নিজেদের উদ্যোগে গড়ে উঠবে, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা গড়ে তুলবে।”
আইসিটি টাওয়ারের ১৫ তলায় অবস্থিত এ অ্যাকসেলেরেটরে উদ্যোক্তাদের জন্য কাজের জায়গা, ভিডিও কনফারেন্স করার সুযোগ পাওয়াসহ নানা সুবিধা রয়েছে।
এছাড়া স্টার্টআপরা এখান থেকে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারী ও অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য অত্যাধুনিক কনফারেন্স রুম ব্যবহার করতে পারবেন।
অ্যাকসেলেরেটরে স্টার্টআপদের কারিগরি সহযোগিতা ও সেবা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ বিশেষজ্ঞ দল থাকবেন।
ব্যবসা উন্নয়নে পরামর্শ, আইনি সহযোগিতাসহ নানা ধরনের সহায়তাও দেওয়া হবে এই অ্যাকসেলেরেটর থেকে।
এ সময় তিনি বলেন, “আজকে আমি এটা দেখে খুবই আনন্দিত যে, বাংলাদেশ সরকারের যত ক্রিটিকাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে, সেখানে আমরা মনিটর করছি। যত সাইবার অ্যাটাক হচ্ছে, হ্যাকিং হচ্ছে, সেটা আমরা এখান থেকে ধরতে পারি।
“এই ক্যাপাবিলিটি বাংলাদেশে আগে ছিল না। এটা প্রথমবারের মত আইসিটি ডিভিশনে হয়েছে।”
জয় বলেন, “এখন বাংলাদেশে কোথাও হ্যাকিং হলে আমরা প্রথমে ধরতে পারব। এটা যদি আইএসপিতে হয়, আমরা তাদের জানিয়ে দিতে পারব। কোনো সরকারি সংস্থায় হলে তাদের সহযোগিতা করব এটা ঠেকাতে।
“এমনকি এটা বলতে পারি, এই সিস্টেম যদি আমাদের আগে থাকত, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিং আগেই আমরা ধরে ফেলতাম। আগে এই সিস্টেম আমাদের ছিল না, এখন আছে।”
এই ল্যাব প্রাথমিকভাবে বিসিসির কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের জন্য জাতীয় ডেটা সেন্টারে সাইবার আক্রমণ রোধ ও প্রতিকারে সহায়ক হবে।
এছাড়াও ল্যাবটির মাধ্যমে কোনো ‘সাইবার ইনসিডেন্ট’ ঘটার পর পর ত্বরিত ব্যবস্থা হিসেবে ‘ইনসিডেন্ট হ্যান্ডলিং ইউনিট’র জব্দ করা ডিজিটাল আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।
আইসিটি বিভাগ থেকে জানায়, এ ল্যাবে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোনসহ নেটওয়ার্ক বিশ্লেষণ করার অত্যাধুনিক সফটওয়্যার ও যন্ত্রপাতি রয়েছে; যা দেশে সংগঠিত সাইবার অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণে সক্ষমতা বাড়াবে।