আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন ফেইসবুক প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা ‘হলোকাস্ট’ নিয়ে অস্বীকৃতি জানানো ব্যবহারকারীদের পোস্ট ফেইসবুকে রাখা হবে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেন তিনি, আর এতেই নতুন এই আলোচনার জন্ম।
Published : 19 Jul 2018, 09:12 PM
প্রযুক্তি সাইট রিকোড-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জাকারবার্গ জানান, এ ধরনের ব্যক্তিদের সাইটটি থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন না তিনি। তারা “ইচ্ছাকৃতভাবে” তাদের ধারণা ভুলভাবে নিচ্ছেন না বলে মত তার।
এই মন্তব্য নিয়ে সমালচনার শিকার হওয়ার পর নিজের মন্তব্য স্পষ্ট করেন জাকারবার্গ, বলা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। রিকোডের সঙ্গে বড় এক সাক্ষাৎকারে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারকারী ইনফোওয়ারস-এর মতো সাইট আর ভুয়া সংবাদ ঠেকাতে ফেইসবুক কী করছে তা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ওই মন্তব্যগুলো করেন জাকারবার্গ।
ভুয়া সংবাদ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নীতিমালা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রতিবেদক কারা সুইশার-কে জাকারবার্গ বলেন, “আমি ইহুদি আর এমন কিছু মানুষ আছেন যারা হলোকাস্ট ঘটার বিষয়টি অস্বীকার করেন।”
“আমি বিষয়টিকে গভীরভাবে আক্রমণাত্মক হিসেবে দেখি। কিন্তু দিনশেষে, আমাদের প্ল্যাটফর্মের এটি সরিয়ে ফেলা উচিৎ তা আমি বিশ্বাস করি না, কারণ আমি মনে করি এমন কিছু থাকবে যা বিভিন্ন মানুষ ভুলভাবে নেবেন। আমি মনে করি না তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এটি ভুল বুঝছেন।”
“সবাই কিছু ভুল বুঝতে পারে আর যদি কেউ কিছু বিষয়ে ভুল বুঝলেই আমরা তাদের অ্যাকাউন্ট সরানো শুরু করি তাহলে মানুষকে একটি কণ্ঠ দেওয়া আর আপনি তাদের নিয়ে ভাবেন এটি বলার জন্য পৃথিবীটা কঠিন হয়ে যাবে।”
জাকারবার্গ এই মন্তব্যগুলো করার পরপরই প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী’ সাময়িকী সার্চলাইট-এর সম্পাদক গেরি গেবল বিবিসি’কে বলেন, “জাকারবার্গ এই বিপজ্জনক কনটেন্টগুলোর বিশ্বব্যাপী ছড়ানো অনেকাংশে বন্ধ করতে পারতেন- কিন্তু তিনি একজন বখে যাওয়া টিনএজার-এর মতো।”
হলোকাস্ট আসলেই ঘটেছিল কিনা তা নিয়ে হওয়া বিতর্ক “ভালো বিশ্বাস” থেকে হচ্ছে- জাকারবার্গ এমনটাই মনে করেন কিনা তা এক টুইটে জিজ্ঞাসা করেন এনবিসি প্রতিবেদক বেনজি সারলিন।
এমন আরও নানা সমালোচনামূলক মন্তব্য আসার পর জাকারবার্গ তার কথার ব্যাখ্যা দেন। ওই প্রতিবেদককে মেইলে তিনি বলেন, “আমি গতকাল আমাদের আলোচনা উপভোগ করেছি।”
“কিন্তু এক্ষেত্রে একটি বিষয় আমি স্পষ্ট করতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে হলোকাস্টের অস্বীকৃতি জানানো গভীরভাবে আক্রমণাত্মক হিসেবে নেই আর আমি অবশ্যই যারা এটি অস্বীকার করেন তাদের উদ্দেশ্য সমর্থনের ইচ্ছা রাখি না।”
চলতি বছর প্ল্যাটফর্মে মুসলিমবিরোধী ঘৃণামূলক বিবৃতি আর ভুয়া সংবাদ পোস্টের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ছড়াতে সহায়তা করেছে ফেইসবুক, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমটির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের তদন্তকারীরা। এ নিয়ে সম্প্রতি ফেইসবুক জানায়, তারা এখন থেকে সহিংসতা ছড়াতে পারে এমন ভুল তথ্য সরানো শুরু করবে।