‘গোপনে সব তথ্য পাঠাচ্ছে অ্যাপগুলো’!

স্মার্টফোনে ব্যবহার করছেন এমন ‘জনপ্রিয়’ কোনো অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপই হয়তো ব্যবহারকারীর কথা শুনছে, অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করছে, গোপনে ডিভাইসে ব্যবহারকারীর কাজকর্মের স্ক্রিনশট রাখছে আর সেগুলো তৃতীয় পক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে- সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন শংকা উঠে এসেছে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2018, 07:52 AM
Updated : 8 July 2018, 07:52 AM

স্মার্টফোনে ব্যবহারকারীর কার্যক্রমের এসব স্ক্রিনশট আর ভিডিওতে তার ইউজারনেইম, পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার আর অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন-এর নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক ডেভিড শফনেস বলেন, “আমরা দেখেছি প্রতিটি অ্যাপেরই আপনি যা টাইপ করেন আর আপনার ডিভাইসের স্ক্রিনে যা আছে তা রেকর্ডের ক্ষমতা আছে।” এই গবেষণার ফলাফল স্পেনের বার্সালোনায় প্রাইভেসি এনহান্সিং টেকনোলজি সিমপোজিয়াম কনফারেন্স-এ উপস্থাপন করা হবে বলে আইএএনএস-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।   

এই গবেষণায় গবেষরা ১৭ হাজারেরও বেশি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ বিশ্লেষণ করেন। শিক্ষার্থীদের তৈরি একটি স্বয়ংক্রিয় পরীক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয় এতে। ১৭ হাজারের মধ্যে নয় হাজার অ্যাপেই স্ক্রিনশট নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাপক ক্রিস্টো উইলসন বলেন, “সেখানে একদমই কোনো অডিও ফাঁস ছিল না। একটি অ্যাপও মাইক্রোফোন চালু করেনি। তারপর আমরা এমন কিছু দেখা শুরু করি যা আমরা আশা করিনি। অ্যাপগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলো তৃতীয় পক্ষের কাছে পাঠাচ্ছে।”

কত সহজে অন্যের লাভের জন্য একটি স্মার্টফোনের প্রাইভেসি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে পারে সেদিকেই জোর দেওয়া হয়েছে এই গবেষণায়। উইলসন বলেন, “এটি অনেকটা নিশ্চিতভাবেই ক্ষতিকর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে। এটি ইনস্টল করা আর তথ্য সংগ্রহ করা সহজ। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বিরক্তিকর হচ্ছে এটি কোনো নোটিফিকেশন বা ব্যবহারকারীর কোনো অনুমতি ছাড়াই করা হয়।”

শুধু অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়ে এই গবেষণা করা হলেও অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমচালিত স্মার্টফোনগুলোর প্রাইভেসি লঙ্ঘনের ঝুঁকি কম এমনটা মনে করার কারণ নেই বলে মত গবেষকদের।

‘হেডেক: দ্য জার্নাল অফ হেড অ্যান্ড ফেইস পেইন’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত আরেক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যবহারকারীদের মাইগ্রেইনের ব্যাথা পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত অ্যাপগুলো অনেক সময় তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করে। চিকিৎসাবিষয়ক অ্যাপ থেকে তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য পাঠানো বা বিক্রি নিয়ে আইনি সুরক্ষা খুবই কম থাকায় এক্ষেত্রে প্রাইভেসি লঙ্ঘনে ঝুঁকি ‘কম’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এই গবেষণার প্রধান গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ল্যানগোন মেডিক্যাল সেন্টার-এর মিয়া মাইনেন বলেন, “২০১৮ সালে ৩৪০ কোটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর প্রায় অর্ধেকই স্বাস্থ্যবিষয়ক অ্যাপগুলো ব্যবহার করবেন, বিভিন্ন ব্যাথা বা স্নায়ুরোগ বিষয়ে বাজারে অনেক ধরনের অ্যাপ রয়েছে।”