শুনানিতে জাকারবার্গ যা বললেন

আগের ঠিক করা দিন অনুযায়ী সিনেটরদের মুখোমুখি হয়েছেন মার্ক জাকারবার্গ। এই বৈঠকে তার কাছ থেকে উঠে এসেছে নানা তথ্য।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2018, 09:59 AM
Updated : 11 April 2018, 10:00 AM

বৈঠকে জাকারবার্গ-এর কথা থেকে আরও যেসব কথা উঠে আসে, তা হলো-

  • “এটি এখন স্পষ্ট যে আমরা ক্ষতির জন্য এই টুলগুলোর ব্যবহার রোধে যথেষ্ট কিছু করিনি।“
  • কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা আর কোনো পরীক্ষা ছাড়াই সব ডেটা মুছে দিয়েছে এমনটা বিশ্বাস করা নিয়ে তিনি বলেন, “আগের ঘটনা দেখলে এটি স্পষ্ট একটি ভুল ছিল।”
  • ফেইসবুক কোনো ‘একচেটিয়া’ ব্যবসায় করছে বলে তিনি মনে করেন না।
  • সবসময় ফেইসবুকের বিনামূল্যের একটি সংস্করণ থাকবে, যার ফলে অর্থ পরিশোধ করা, বিজ্ঞাপনহীন একটি ফেইসবুক সংস্করণের সম্ভাবনাও তৈরি হবে।
  • ঘৃণামূলক বিবৃতি ব্যবস্থাপনায় ত্রুটির হার যে সীমার মধ্যে থাকলে তিনি “খুশি” হতেন তার চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে।
  • জাকারবার্গ ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিষ্ঠানটির মধ্যে রাজনৈতিক পক্ষপাত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

ছবি- রয়টার্স

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ডেটা কেলেঙ্কারি নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবে জাকারবার্গ বলেন, “এটি অস্ত্রের লড়াইয়ের মতো। তারা আরও ভালো হচ্ছে।” বেহাত হওয়া ডেটার মধ্যে প্রায় ১৫০০ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত মেসেজও ছিল বলে কংগ্রেসের শুনানিতে জানিয়েছেন জাকারবার্গ। 

২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রভাবিত করতে রাশিয়ার চেষ্টা নিয়ে অভিযোগের তদন্তকারী বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলার ফেইসবুক কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলেও জানান জাকারবার্গ। মুলার-এর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করা ফেইসবুক কর্মীদের মধ্যে নিজে ছিলেন না বলেও জানান তিনি। তবে, তিনি বলেন, “বিশেষ কাউন্সেলের সঙ্গে আমাদের কাজ গোপন আর একটি উন্মুক্ত সেশনে আমি গোপন কিছু প্রকাশ করব না তা নিশ্চিত করতে চাই।“

চলতি বছর জানুয়ারিতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে মুলার-এর কার্যলয় থেকে ১৩ রুশ ব্যক্তি আর তিনটি রুশ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়।

এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ইন্টারনেট রিসার্চ এজেন্সি, এই সংস্থাকে ‘রাশিয়ান ট্রল ফার্ম’ হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয় বলে বিবিসি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলো শনাক্তে তার প্রতিষ্ঠান নতুন টুল বানাচ্ছে বলে দাবি করেন জাকারবার্গ। তিনি বলেন, “রাশিয়ায় এমন মানুষ আছে যাদের কাজ হচ্ছে আমাদের ব্যবস্থা, অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যবস্থা আর অন্য ব্যবস্থাগুলোও কাজে লাগাতে চেষ্টা করা। এই সব ক্ষেত্রে উন্নত করতেও আমাদেরকে বিনিয়োগ করতে হবে।“  

ছবি- রয়টার্স

সোশাল জায়ান্টটিকে কীভাবে আরও নিয়ন্ত্রণে আনা হতে পারে তা নিয়েও সিনেটরদের প্রশ্ন ও তোপের মুখে পড়েন জাকারবার্গ। সিনেটর জন কেনেডি তাকে সতর্ক করে বলেন, “আমি ফেইসবুককে নিয়ন্ত্রণ করতে ভোট করতে চাই না। কিন্তু ঈশ্বর চাইলে আমি করব। এটি আপনার উপর নির্ভর করবে…।” ফেইসবুকের ‘ইউজার এগ্রিমেন্ট’-কে জঘন্য বলে  সমালোচনা করেন তিনি।

চাপের মুখে ৩৩ বছর বয়সী এই ধনকুবের প্রযুক্তি নেতা বলেন, যে কোনো নীতি নির্ধারণ তিনি মেনে নেবেন, যদি তা ‘সঠিক নীতিমালা’ হয়, যদিও তিনি এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।

এই শুনানি শুরু হওয়ার প্রথম বিরতির মধ্যে ফেইসবুকের শেয়ারমূল্য প্রায় পাঁচ শতাংশ বেড়ে যায়। এ হিসেবে জাকারবার্গ-এর মোট সম্পদের পরিমাণও বাড়ে তিনশ’ কোটি ডলার।