আছড়ে পড়লো চীনা মহাকাশ গবেষণাগার

পৃথিবীতে ভেঙ্গে পড়েছে চীনের মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং-১। সোমবার দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ৮.১৫ টায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর স্টেশনটির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায় এবং বাকি অংশ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে এসে পড়ে।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2018, 07:07 AM
Updated : 2 April 2018, 07:07 AM

চীনা মহাকাশ কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশের কারণে এটির ‘বেশির ভাগ’ অংশ পুড়ে গেছে-- খবর রয়টার্স-এর।

এর কিছু সময় আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল, তাদের ধারণা দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের ব্রাজিলিয়ান কোস্টের সাও পাওলো এবং রিও ডি জেনিরো অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করবে এটি।

দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর দিয়ে মহাকাশ স্টেশনটি প্রবেশের কথা নিশ্চিত করেছে ইউনাইটেড স্টেটস এয়ার ফোর্স ১৮ স্পেস কন্ট্রোল স্টেশন। পৃথিবীর কক্ষপথে সব কৃত্রিম বস্তু শনাক্ত ও নজরদারী করে থাকে সংস্থাটি। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাজ্যে তাদের সংস্থার সহযোগিতায় মডিউলটির প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে।

চীনের মহাকাশ গবেষণাগার তিয়ানগং-১ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীতে ভেঙে পড়বে এমনটা আগেই জানিয়েছিলেন গবেষকরা। তবে, এর সঠিক সময় নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। মডিউলটির সঙ্গে চীনের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ফলে এর পতনের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না, বলা হয় বিবিসি’র প্রতিবেদনে ।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী ব্র্যাড টাকার বলেন, তিয়ানগং-১ এর অবশিষ্টাংশ তাহিতি’র ১০০ কিলোটার দক্ষিণ-পশ্চিমে পড়েছে।

রয়টার্স-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টাকার বলেন, “ক্ষুদ্র অংশ নিশ্চিতভাবেই ভূপৃষ্ঠে পড়েছে।” এর ৯০ শতাংশ বায়ুমণ্ডলে পুড়ে যেতে পারে এবং ১০ শতাংশ ভূপৃষ্ঠে পড়েছে, এই অংশের ওজন হবে ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি।

“খুব সম্ভবত ধ্বংসাবশেষ মহাসাগরে পড়েছে এবং মানুষ যদি এর ওপর দিয়েও যায় এটি দেখতে সাগরের বর্জ্য মনে হবে, যা কয়েক হাজার কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকবে,” যোগ করেন টাকার।

২০১১ সালে তিয়ানগং-১ মডিউলটি মহাকাশে পাঠায় চীন। দেশটির মহাকাশ গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে ডকিং এবং কক্ষপথে পরীক্ষা চালানোর লক্ষ্যেই এটি চালু করা হয়। ২০২৩ সালের মধ্যে কক্ষপথে একটি স্থায়ী স্টেশন বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে চীনের।

২০১৩ সালেই তিয়ানগং-১ মডিউলটি ধ্বংস করার কথা ছিল চীনের। কিন্তু বারবার এটির মিশনের সময় বাড়ানো হয়। ২০১৭ সালের শেষ দিকেই এই মডিউলটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে বলে ধারণা করেছিল চীন।