ব্রিটেন ফার্স্ট হচ্ছে একটি ব্রিটিশ রাজনৈতিক সংগঠন। ২০১১ সালে ব্রিটিশ ন্যাশনাল পার্টি’র সাবেক সদস্যরা এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমটি বলেছে, এই দলটি বারবার ফেইসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন করে আসছিল। ধর্মীয় হয়রানির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর চলতি মাসের শুরতে ব্রিটেন ফার্স্ট দলের লিডার পল গোল্ডিং আর ডেপুটি লিডার জেয়ডা ফ্রানসেন-কে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে বিবিসি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এই দলের ফেইসবুক পেইজে লাইক দেওয়া মানুষের সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি। গোল্ডিং আর ফ্রানসেন-এর পেইজের ফলোয়ার সংখ্যাও ‘অনেক বেশি’ বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ফেইসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন করে এমন কনটেন্ট পোস্ট দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সতর্কর্তা দেওয়া হয়েছিল। এই সতর্কবার্তাও ব্রিটেন ফাস্ট এড়িয়ে গেলে দলটির পেইজগুলো সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ফেইসবুক। এই দলটিকে আগের পেইজের জায়গায় অন্য কোনো পেইজ চালু করতেও দেওয়া হবে না।
এই দলের পেইজ থেকে দেওয়া ছবি বা ভিডিওগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই বানানো হয়েছে বলে ফেইসবুক মনে করেছে- এমন ধারণা প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।
এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খানও। তিনি বলেন, “ব্রিটেন ফার্স্ট একটি জঘন্য ও ঘৃণাভিত্তিক দল।”
আক্রমণাত্মক পোস্টগুলোতে যে বিষয়গুলো ছিল বলে ধারণা পাওয়া গেছে তার তালিকা দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। এগুলো হচ্ছে- গ্রুপের নেতাদের একটি ছবি যার ক্যাপশনে লেখা ‘ইসলামোফোবিক অ্যান্ড প্রাউড’, মুসলমান অভিবাসীদের জন্তুর সঙ্গে তুলনার করে দেওয়া একটি ক্যাপশন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক মন্তব্য করে একাধিক ভিডিও।
এক ব্লগ পোস্টে ফেইসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি সব ধারণার জন্য একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু রাজনৈতিক দর্শনগুলো ঘৃণামুক্ত বক্তব্য প্রকাশ করা উচিৎ।
ব্রিটেন ফার্স্ট-এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে কিছু সময়ে ফেইসবুকের উপর চাপও ছিল। প্রতিষ্ঠানিটি জানায়, তারা মানুষের বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে করা ঘৃণামূলক বিবৃতি সরিয়ে দেয়।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নিজেদের নতুন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা আসার পর গোল্ডিং আর ফ্রানসেন-এর অ্যাকাউন্ট বাতিল করে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার। ফ্রানসেন-এর পোস্ট করা একটি ইসলামবিরোধী পোস্ট চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে রিটুইট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।