প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুবিধা বঞ্চিত, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত এবং তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ ও সৎ ব্যক্তিদের জন্যও এটা লোভনীয় পেশা হয়ে উঠেছে বলে ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
কয়েক বছর ধরেই ব্যাপকভাবে হ্যাকারদের কবলে পড়ছিল বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। সাধারণত কম্পিউটারে দক্ষ তরুণরাই সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে একত্রিত হয়ে কোম্পানির সিস্টেমে আক্রমণ চালাত, গোপনীয় ও গ্রাহকদের তথ্য চুরির জন্য তথ্যভাণ্ডারে হানা দিত।
এখন সিস্টেমের ‘বাগ’ বা খুঁত শনাক্তের জন্য পুরস্কার চালু করে ওই সব মেধাবী তরুণদের কাজে লাগাচ্ছে করপোরেশনগুলো। ফেইসবুক, টুইটার, অ্যাপল, ইয়াহুর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বিশাল অংকের অর্থ দিয়ে এই হ্যাকারদের নিয়োগ করছে তাদের খুঁত খুঁজে বের করার কাজে। এই পারিশ্রমিক কম বেতনের দেশগুলোর মেধাবী কম্পিউটার প্রকৌশলীদের জীবন বদলে দিতে পারে।
টেলিগ্রাফের সাংবাদিক মারগি মারফির ভাষ্য মতে, কোম্পানিগুলোর কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এভাবে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে লাখ লাখ ডলার আয় করছেন হাজার হাজার ‘ইথিকাল হ্যাকার’। মাত্র কয়েক ঘণ্টার কাজেই ৫০ থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন তারা।
অন্য দশজন কিশোর থেকে আলাদা নন মাসউক। বাবা-মা ও দুই বোনের সঙ্গে থাকেন তিনি, প্রতিদিনই মাধ্যমিক স্কুলে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় তাকে।
এসবের মধ্যেই ইয়াহু ও গুগলসহ ৬০টিরও বেশি কোম্পানির সিস্টেম হ্যাক করেছেন মাসউক; এই খাতে অন্যতম ‘বাগ ফাইন্ডার’ হিসেবেও পরিচিতি তৈরি হয়েছে তার।
মাসউক বলেন, “আমি এই কাজ করি তা আমার পরিবার ও কাছের বন্ধুরা ছাড়া আর কেউ জানে না।”
নিজের আয়ের হিসাবও রাখেন না বলে জানান তিনি। সর্বশেষ প্রতি সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা হ্যাকিং করে ৬ মাসে তার আয় হয়েছে ৬০ হাজার ডলার।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, লেবাননে বেড়ে ওঠা মাসউকের হ্যাকিং নিয়ে তৎপরতা শুরু ১৩ বছর বয়সে। কয়েক মাসের মধ্যেই একটি প্রতিষ্ঠানের সাইবার দুর্বলতা ধরে ফেলেন তিনি। আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের খুঁত ধরিয়ে দেওয়ার মতো কাজ করে খুব খুশি হন মাউসক। কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের নিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে পারছেন-এটাই তার ভালো লাগা।
কারি জানান, সাত মাসের একটি ‘বাগ বাউন্টি’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সেই উপার্জন দিয়ে ২০১৪ মডেলের করোলা স্পোর্ট কার কেনেন।
তিনি জানান, অধিকাংশ হ্যাকারের মতো তরুণ বয়স থেকেই তিনিও ‘সিস্টেম ভাঙতে’ আগ্রহী ছিলেন। ভাইয়ের সঙ্গে ভিডিও গেইম খেলার সময় নিজের মধ্যে এই তাড়না বোধ করতেন তিনি।
সদ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম সেমিস্টার শেষ করা ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা খাতে স্থায়ী চাকরি পেতে চান।