ভারতে সৃজনশীলতা দেখেন না ওজনিয়াক

ভারতীয়রা সৃজনশীল হতে পারেন না- এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 March 2018, 12:59 PM
Updated : 1 March 2018, 12:59 PM

অ্যাপলের প্রথম কম্পিউটার অ্যাপল ১ তৈরির পেছনে থাকা অন্যতম এই ব্যক্তি বলেছেন, ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা অধ্যয়নশীলতাভিত্তিক আর এতে সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দেওয়া হয় না।

এক সাক্ষাৎকারে ওজনিয়াক আরও বলেন, গুগল, ফেইসবুক আর অ্যাপলের মতো কোনো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বা বড় ধরনের সাফল্য অর্জন ভারতে হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। ওজনিয়াক-এর মতে, বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ হিসেবে ভারতে শুধু ইনফোসিস-এর নাম নেওয়া যায় আর সেটিও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান নয়। আর শীঘ্রই বিশ্ব প্রযুক্তি খাতে ইনফোসিস-এর নাম যুক্ত হওয়ার কোনো আশা তিনি করছেন না।

ইকোনমিক টাইমস-এর পক্ষ থেকে ভারতের প্রযুক্তি উদ্ভাবন নিয়ে মন্তব্য করতে বললে ওজনিয়াক বলেন, “আমি নৃবিজ্ঞানী নই, আমি ভারতের সংস্কৃতি সম্পর্কে যথেষ্ট ভালো জানি না। আমি এখানে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বড় অগ্রগতি দেখতে পাই না। এখানে সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোনটি, হয়তো ইনফোসিস? আমি ইনফোসিস থেকে সে ধরনের কিছু আসতে দেখি না আর আমি তাদের জন্য তিনবার বক্তব্য দিয়েছি।”

ভারতীয়দের মধ্যে সৃজনশীলতার অভাব রয়েছে আর এখানকার লোকেরা সৃজনশীল কর্মজীবনের দিকে উৎসাহী নন বলেও মন্তব্য করেছেন ওজনিয়াক। তিনি বলেন, “এখানের রীতিতে সাফল্য হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ভালো ফলাফল, পড়াশুনা, শেখা, অনুশীলন, ভালো চাকরি পাওয়া আর সুন্দর জীবন। ভারতের উচ্চশ্রেণির জন্যই এমনটা, নিম্নশ্রেণি নয়। আমি দুটি ভারত দেখতে পাই। বিষয়টা অনেকটা সিঙ্গাপুরের শিক্ষার মতো, পড়াশুনা করো, কঠোর পরিশ্রম করো, একটি এমবিএ ডিগ্রি পাও, তারপর তোমার একটি মার্সেইডিজ হবে কিন্তু সৃজনশীলতা কোথায়? যখন আপনারা আচরণ এতটা কাঠামোগত আর প্রত্যাশ্যা করার মতো তখন আপনার থেকে সৃজনশীলতা চলে যাবে, সবাই একই রকম। নিউ জিল্যান্ডের মতো একটি ছোট দেশের দিকে তাকান, লেখক, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, এটি পুরো আলাদা একটি বিশ্ব।”

স্কুলগুলোতে কোডিংয়ের বিষয়েও ওজনিয়াককে জিজ্ঞাসা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদনে। তার ধারণা, কোডিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ১২ বছরের আগে শিশুদের এটি শেখানো উচিৎ নয়। কারণ মানুষের মস্তিষ্ক যুক্তির ক্ষমতা পায় ১২ বছর বয়সের পর। “১২ বছর বয়স হওয়ার আগে আপনি কোনো প্রতীকি যুক্তিদর্শনের মাত্রায় যেতে পারবেন না। কিছু মানুষ অনেক আগেই এতে চলে আসেন, কিন্তু  অধিকাংশ মানুষই করেন ১২ বছর বয়সে, আর এ কারণে আপনি এ বয়সে আসার আগে বীজগণিত শেখানো যায় না। আর আপনি যখন বীজগণিতের জন্য প্রস্তুত প্রোগ্রামিং শুধু তখনই শেখানো যাবে”- বলেন ওজনিয়াক।