ফেইসটাইমে বাঁচলো জীবন!

বোনের সঙ্গে ফেইসটাইম ভিডিও কলে থাকাকালীন স্ট্রোক করেন এক নারী। আর ওই কলে থাকার কারণেই তার জীবন বেঁচেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফেইসটাইম হচ্ছে আইফোনের ভিডিও কল ফিচার।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2018, 01:56 PM
Updated : 21 Feb 2018, 01:56 PM

অপোকুয়া কোয়াপং নামের ওই নারী যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে একাই থাকেন। তার বোন আডুমিয়া স্যাপোং থাকেন যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে। ভিডিও কল চলাকালীন হঠাৎ স্যাপোং লক্ষ্য করেন তার বড় বোন “ঠিক অবস্থায় আছেন বলে মনে হচ্ছে না”। বোনের কণ্ঠও অস্পষ্ট হয়ে আসলে তিনি সতর্ক হয়ে যান বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। 

কোয়াপং বলেন, অবস্থা কতটা গুরুতর ছিল তা তিনি তখন বুঝতে পারেননি। ৫৮ বছর বয়সী এই নারী তখন বিকেলে মাত্র ঘুমিয়ে উঠেছেন, ওই সময়ই স্যাপোং ফেইসটাইমে তাকে ভিডিও কল করেন।

কোয়াপং বলেন, “আমার বোন আমাকে দেখে বলে আমার চেহারা দেখে তার কাছে ঠিক মনে হচ্ছে না। সে এটাও বলেও যে আমার কণ্ঠ অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমি ভেবেছিলাম অযথা ব্যস্ত হচ্ছে আর আমি তাকে বিশ্বাস করিনি।”

স্যাপোং বলেন, “আমি যখন অপোকুয়াকে ফোন করলাম সে তখন বলে তার ভালো লাগছে না, ক্লান্ত লাগছে আর হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। আমি তখন তাকে বলি, ‘তোমার অ্যাসপিরিন নেওয়া উচিৎ।’ সে এক গ্লাস পানি নেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু পারছিল না। তারপর ফেইসটাইম ভিডিও কলে আমি দেখি তার মুখ ঢলে পড়ছে। তখন আমি তাকে বলি তার ফোন রেখে দেওয়া উচিৎ আর তখনই ডাক্তার দেখানো উচিৎ।”

“সে ভাবে আমি অযথা ব্যস্ত হচ্ছি, আর তাই আমি আমাদের আরেক বোনকে কনফারেন্স কলে ডাকি। আমাদের ওই বোন একজন ডাক্তার। সে এসে তার (কোয়াপং)-এর কথা শুনতে পায় এবং সেও বলে তার কণ্ঠ অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা দুজনেই তখন তাকে সরাসরি ডাক্তারের সহায়তা নিতে ফোন দিতে বলি।”

কোয়াপং ফোনটি রেখে ৯১১ ডায়াল করেন।

হাসপাতালে স্ক্যান করার পর দেখা যায় কোয়াপংইয়ের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে। এই স্ট্রোক তার বাম পাশ অবশ করে দিয়েছে। 

খাদ্যবিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করা কোয়াপং বলেন, “ফেইসটাইম যে আমার জীবন বাঁচিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যদি আমার বোন খেয়াল না করত যে কিছু একটা ঠিক নেই, তাহলে এখন সবকিছু আর এমন থাকত না।”

“প্রযুক্তি শুধু আমার জীবন বাঁচিয়েছে তাই নয়, এটি আমাকে এখন বাঁচার সুযোগও দিয়েছে। কাজের জন্য আগে আমি যেভাবে যাতায়াত করতাম যেহেতু এখন আর তেমন করতে পারি না, তাই আমাকে ভিডিও কনফারেন্সের উপর অনেক বেশি নির্ভর করতে হয়।”

“ইন্টারনেট আর প্রযুক্তি নিয়ে আপনি অনেক নেতিবাচক কাহিনী শুনে থাকবেন। কিন্তু আমি মনে করি প্রযুক্তি কীভাবে ভালোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এটি তার একটি উদাহরণ।”

স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রতিরোধ ও প্রচারণাবিষয়ক প্রধান এজমি রাসেল বলেন, “যে কারও যে কোনো বয়সে যে কোনো সময়ে স্ট্রোক হতে পারে- তাই মানুষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জানাটা গুরুত্বপূর্ণ: এটি জীবন বাঁচাতে পারে।”