সফলভাবেই রওনা দিল ফ্যালকন হেভি

মঙ্গলবার সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে মহাকাশযান নির্মাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স-এর নতুন রকেট ‘ফ্যালকন হেভি”। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এই রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2018, 10:34 AM
Updated : 7 Feb 2018, 10:34 AM
 

শাটল ব্যবস্থা আসার পর সবচেয়ে ক্ষমতাধর বিশাল এই মহাকাশযান কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই উপরে উঠে যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে। 

স্পেসএক্স প্রধান নির্বাহী মার্কিন উদ্যোক্তা ও ধনকুবের ইলন মাস্ক বলেন, নতুন এই রকেটটি বানাতে যে চ্যালেঞ্জগুলোর সম্মুখীন হতে হয়েছিল তা এর সাফল্য আসার সম্ভাবনা অর্ধেকে নিয়ে আসে। রকেট উৎক্ষেপিত হওয়ার পর তিনি বলেন, “ প্যাডের উপর বড় একটি বিস্ফোরণ, রাস্তায় একটি চাকা লাফাচ্ছে- আমার মাথায় এমন একটি ছবিই ছিল। কিন্তু সৌভাগ্যবশত সেটি ঘটেনি।”  

এই যাত্রার মাধ্যমে ফ্যালকন হেভি সবচেয়ে ক্ষমতাধর লঞ্চ ভেইকল-এ পরিণত হয়েছে।

ছবি- স্পেসএক্স

রকেটটির প্রথম স্তরে নয়টি ইঞ্জিন কোরে ২৭টি মার্লিন ইঞ্জিন রয়েছে। এর ওজন ২৩ লাখ কেজি যা প্রায় ১৮টি বোয়িং ৭৪৭ প্লেনের সমান। ভূমি থেকে দুই হাজার কিলোমিটার বা তার কম উচ্চতার কক্ষপথে এটি সর্বোচ্চ ৬৪ টন ভর বহন করতে সক্ষম। অংকটা লন্ডনের পাঁচটি দ্বিতল বাস বহনের সমান।   

ফ্যালকন হেভি’র পর বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রকেট হচ্ছে ডেল্টা IV হেভি। ফ্যালকন হেভি’র ক্ষমতা ডেল্টা IV হেভি-এর ক্ষমতার দ্বিগুণের চেয়ে কিছুটা বেশি। কিন্তু ফ্যালকন হেভি বানাতে খরচ ডেল্টা IV হেভি-এর এক তৃতীয়াংশ বলে জানান মাস্ক।

পরীক্ষামূলক আর অনিশ্চিত এই অভিযানে এত বেশি ভর পাঠাতে চাননি মাস্ক। তাই আগের কথা অনুযায়ী এতে দেওয়া হয়েছে নিজের পুরানো চেরি-রেড রঙের টেসলা স্পোর্টস গাড়িটি।

ছবি- স্পেসএক্স

গাড়ির চালকের আসনে বসানো হয় মহাকাশ অভিযাত্রীদের পোশাক পরানো এক মানবমূর্তি। রেডিওতে ছাড়া হয় ডেভিড বাউয়ি’র একটি গান। সূর্যের কাছাকাছি একটি ডিম্বাকৃতির কক্ষপথে মানবমূর্তিসহ টেসলাটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গল গ্রহ যতদূরে, টেসলা গাড়িটি প্রায় সে পরিমাণ দূরত্ব পাড়ি দিয়েছে।  

তিনটি ফ্যালকন ৯ রকেট একসঙ্গে জুড়ে তৈরি করা হয়েছে ফ্যালকন হেভি। এ নিয়ে মাস্ক বলেন, “এটি অসাধারণ ছিল। সত্যিকার অর্থেই, এটাই হয়তো আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে রোমাঞ্চকর দৃশ্য।”

তৃতীয় ফ্যালকন ৯ বুস্টারটি সাগরের কয়েকশ’ কিলোমিটার ভেতরে থাকা একটি ড্রোন শিপে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত এর যন্ত্রের অপর্যাপ্ত ক্ষমতার কারণে এটি লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। ঘণ্টায় প্রায় পাঁচশ’ কিলোমিটার বেগে এটি সাগরে এসে পানিতে ধাক্কা খায় আর সঙ্গে সঙ্গে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।