যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন বা এফসিসি-এর নীতিনির্ধারকের মধ্যে ৩-২ ভোটে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের করা ‘নেট নিরপেক্ষতা’ আইন বদলানোর পক্ষে সিদ্ধান্ত আসে।
এর ফলে দেশটির ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বা আইএসপিগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডেটার জন্য নেটের গতি কমাতে বা বাড়াতে পারবে। সেই সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন সেবা ব্যবহারের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের চার্জ রাখার সুযোগ পাবে। কিন্তু কোন ক্ষেত্রে গতি বাড়ানো হচ্ছে বা কম আর কোন ক্ষেত্রে কত চার্জ নেওয়া হচ্ছে তা প্রকাশ করতে হবে।
এই ভোট-কে সামনে রেখে এই পরিবর্তনের বিপক্ষে থাকা আন্দোলনকারীরা এফসিসি’র ভবনের বাইরে অবস্থান নেন। ওবামার আনা এই নীতিমালা পরিবর্তন করে দিলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ কমে যাবে- অনেকেই এমন মত দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইও শুরু হয়ে গেছে। নিউ ইয়র্কের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলী এরিক স্নাইডারম্যান এফসিসি’র এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে মামলা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তার অভিযোগ, এই কর্তৃপক্ষ জনগণের সমালোচনা সঠিকভাবে যাচাইয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, নিউ ইয়র্কে প্রায় ২০ লাখ মানুষ এফসিসি’র ওয়েবসাইটে এই পরিবর্তন নিয়ে মন্তব্য করে আসছিলেন।
এ নিয়ে শুনানি চলাকালে এফসিসি কমিশনার মাইকেল ও’রিয়েলি এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, কর্মীরা এসব মন্তব্য দেখেছেন আর অযাচিত মন্তব্যগুলো সরিয়ে দিয়েছে।
এফসিসি চেয়ারম্যান অজিত পাল বলেন, এই পরিবর্তন উদ্ভাবনে উৎসাহিত করবে। সেই সঙ্গে প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে জনগণকে দ্রুত গতির সংযোগ দিতেও আইএসপিগুলোকে উৎসাহ যোগাবে। এই পরিবর্তনকে ‘ইন্টারনেট স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
ইন্টারনেটে মুক্ত ও সমানভাবে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে জারি করা ‘নেট নিউট্রালিটি’ আইন রদ করার প্রস্তাব এনেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন্স কমিশনের (এফসিসি) প্রধান।
২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসন যুগান্তকারী ‘নেট নিরপেক্ষতা’ আইন জারি করেছিল। চলতি বছর ২১ নভেম্বর এফসিসির নতুন প্রধান অজিত পাই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবটি প্রকাশ করেন।
গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অজিত পাইকে এফসিসি প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। পাইয়ের সঙ্গে কমিশনে আছেন আরও দুই রিপাবলিকান সদস্য। অন্য দুইজন ডেমোক্রেট।
ফোন ও কম্পিউটারে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া বড় কোম্পানিগুলো ‘নেট নিউট্রালিটি’ বা ‘নেট নিরপেক্ষতা’র বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। আর গুগল আর ফেইসবুকের মতো বড় অনলাইন কোম্পানিগুলো এর পক্ষে ছিল কারণ তারা মনে করে ‘নেট নিরপেক্ষতা’ না থাকলে বড় বড় টেলিকম কোম্পানি ও আইএসপিগুলো ইন্টারনেটে ‘গেটকিপার’ হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
আরও খবর-