চীনের হারবিন মেডিকেল ইউনিভার্সিটি-এর ড. রেন শিয়াওপিং শনিবার চায়না ন্যাশনাল রেডিও-কে বলেন, বর্তমানে নিয়মিত হয় এমন অনেক অস্ত্রোপাচার যখন প্রথমবার হয়েছিল তখন এগুলোকে ‘অনৈতিক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। রেন বলেন, “আমাদের সমাজ উন্মুক্ত আর আমাদের কাজ হচ্ছে আমাদের পেশাদার খাতে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলো সমাধান করা।”
“মাথা প্রতিস্থাপন চিকিৎসাগতভাবে সব দুরারোগ্য রোগের একটি সমাধান হবে।”
রেন আর ইতালীয় চিকিৎসক সার্জিয়ো ক্যানাভেরো দুইটি মৃতদেহে এ প্রক্রিয়া নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন বলেও জানান। এ পরীক্ষায় একটি দেহে মাথার রক্তধমনী আর স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন করে আরেকটি দেহের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এ খবর প্রকাশের আগের সপ্তাহে ১৮ ঘণ্টাব্যাপী এই পরীক্ষা চালানো হয়।
এবার একই প্রক্রিয়ায় এক কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে শুধু পার্থক্য হচ্ছে- কোনো মৃত মানুষের রোগমুক্ত মাথা যোগ করা হবে সুস্থ দেহ অথচ মৃত মস্তিষ্কের কোনো রোগীর দেহে।
এই অস্ত্রোপাচারের তারিখ কয়েকদিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে হং কংভিত্তিক দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এর প্রতিবেদনে।
অন্যদিকে, চিকিৎসা পেশার কেউ কেউ বলছেন, কোনো মানুষ নিয়ে এই প্রতিস্থাপন করার জন্য প্রক্রিয়াটি এখনও পরিপক্ক অবস্থায় আসেনি। সেইসঙ্গে মৃতদেহ দিয়ে চালানো পরীক্ষার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার সাফল্য নিশ্চিত করা যায় না বলেও দাবি উঠেছে।
রেন বলেন, মৃতদেহ নিয়ে চালানো পরীক্ষার ফলাফল সামনের কয়েকদিনের মধ্যে একটি চিকিৎসাবিষয়ক জার্নালে প্রকাশিত হবে।
সাক্ষাৎকারে রেন বলেন, “অস্ত্রপচারে কখনও এমন কোনো প্রক্রিয়া ছিল না। আমরা এই অস্ত্রোপাচারের জন্য একটি নকশা চূড়ান্ত করেছি আর একটি চিকিৎসা জার্নালে এটি প্রকাশের আবেদন করেছি। খুঁটিনাটি যাচাইয়ের পর এই খাতের বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পেরেছেন আমাদের প্রক্রিয়া যুক্তিযুক্ত।”
রেন আরও বলেন, মৃতদেহ নিয়ে চালানো ওই পরীক্ষায় চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার আর টিসু ঠিক করার বিষয়ে বিভিন্ন কারিগরী অপশন খুঁজে পেয়েছেন।
চীনের পেকিং ইউনিভার্সিটি এর ইনস্টিটিউট ফর মেডিকেল হিউম্যানিটিজ-এর অধ্যাপক ওয়্যাং ইউ ওই রেডিওকে বলেন, এসব পরীক্ষায় প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই অস্ত্রোপচার শুধু তখনই করতে দেওয়া উচিৎ যখন এটি মানবিক ও প্রাণি দিয়ে করা পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়।
আরও খবর-