ইন্টারনেটে শিশুদের নিরাপদ রাখতে অভিভাবকদের তাগিদ

শিশুরা কীভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, কী করছে, কী দেখছে, তা নজরে রাখতে অভিভাবকদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে নিরাপদ ইন্টারনেট নিয়ে সচেতনতামূলক এক অনুষ্ঠানে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2017, 04:49 PM
Updated : 16 Oct 2017, 07:06 PM

অনলাইনে ‘ব্লু হোয়েল গেইম’ বা অন্য কোনো বিষয়ে জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে আত্মীয় স্বজন ও নিকটজনদের শরণ নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শিশুদেরও।

সোমবার ঢাকার জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ‘ব্লু হোয়েল গেইম’ নিয়ে ‘সোস্যাল মিডিয়া প্যারেড’ অনুষ্ঠানে এই পরামর্শ আসে আলোচকদের কাছ থেকে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, নিরাপদ ইন্টারনেট নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন।

সাম্প্রতিক আলোচিত ‘ব্লু হোয়েল গেইম’ প্রসঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, “এই গেইম বন্ধে বিটিআরসি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এছাড়া এ বিষয়ে ২৮৭২ নম্বরে বিটিআরসির সাথে যোগাযোগ করে তথ্য দিতে পারছে।”

সোশ্যাল মিডিয়া প্যারেডে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ

শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, “অভিভাবকদের বলব, যারা ইন্টারনেটে কানেটটেড, তারা কী করছে, ইন্টারনেটে কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, তার খোঁজ রাখতে হবে। না হলে মারাত্মক বিপদ সামনে আছে।

“ইন্টারনেট ও গেইম অ্যাডিকশন থেকে দূরে রাখতে হবে। ১৮ বছরের নিচে যারা টিন এজার এ সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়, তাই পিতামাতাকে কাছাকাছি থাকতে হবে।”

২০১৮ সালের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক কেবল চলে যাবে জানিয়ে পলক বলেন, “সবার কাছে অনুরোধ থাকবে আমরা যেন ইন্টারনেটের প্রোডাকটিভ ব্যবহার করি। ইনন্টারনেট ব্যবহারে সচেতন হই।”

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সোশাল মিডিয়াতে কোনো জটিল পরিস্থিতিতে পড়লে আত্মীয় স্বজন ও অন্য কারও শরণাপন্ন হন। অস্বাভাবিক পোস্ট দেখলে মায়া আপা অ্যাপ বা কাছের কেউ বা ২৮৭২ নম্বরে বিটিআরসির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।”

তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ থেকেও এধরনের সহায়তা দিতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়া প্যারেডে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক

নিরাপদ ইন্টারনেটের জন্য ‘সাইবার সিকিউরিটি পুল’ করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী পলক।

“বর্তমানে সাত কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট পুল তৈরি করতে চাচ্ছি। সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি বড় পরিসরে করা হবে।”

সাইবার হামলার মারাত্মক বিপদের কথা মনে রেখে আগামী ৩  থেকে ৪ বছরে এক হাজার সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট তৈরি লক্ষ্যের কথাও জানান তিনি।

আগামী প্রজন্মকে আরও সৃজনশীল করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান পলক।

তিনি বলেন, “ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রিনিওরশিপ একাডেমি (আইডিয়া) এবং শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে আমরা গাইড করব, আগামী প্রজন্ম কীভাবে আরও ইনোভেটিভ হয়ে উঠে।”

ঢাকার কারওয়ান বাজারের সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে সোশ্যাল মিডিয়া প্যারেডে মায়া আপার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আইভি হক রাসেল। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন মুনির হাসান। অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং এডিটরিয়াল পলিসি কোঅর্ডিনেটর গাজী নাসির উদ্দীন আহমেদ, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট রুবিনা জাহান রুমী (হেড ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ, কান পেতে রই) এবং মায়া ডটকম ডটবিডির প্রতিষ্ঠাতা আইভি হক রাসেল এবং অনওয়ার্ড কাউন্সেলিং সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা নাসিম জান সাজিদ।

এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগী ছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।