আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ড দেশটিতে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কমবয়সী নারী ‘রিড’ নৃত্য নামের এই উৎসবে অংশ নেন। এই নৃত্যের মাধ্যমে নারীদের ‘সতীত্ব’ ও ‘কুমারীত্ব’ উদযাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে দেশটির রাজা তার জন্য নতুন স্ত্রী পছন্দ করেন। আট দিনের এই আয়োজনে নারীরা বুক খোলা রেখে হয়ে রাজপ্রাসাদের সামনের রাস্তায় কুচকাওয়াজ করেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই উৎসবকে ‘সেকেলে’ ও ‘লিঙ্গ বৈষম্যমূলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে কড়া সমালোচনা করে- উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
এই উৎসবের ভিডিও দেখানোর অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে ইউটিউবের একজন মুখপাত্র বিবিসি-কে বলেন, ইউটিউব “সাংস্কৃতিক বা যথাযথ প্রাসঙ্গিক হলে” নগ্নতার অনুমতি দেয়।
এ ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছে অ্যালফাবেট মালিকানাধীন ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তারা সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল হতে চায়।
আফ্রিকার “সবচেয়ে সুন্দর সংস্কৃতি… যা দেখা যায় আর আফ্রিকান মানুষদেরই ধারণ করা”- এমন বিষয়ের উপর অনলাইন ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টিভি ইয়াবানতু-এর প্রধান লাজি ডামিনি একটি প্রচারণা চালানো শুরু করেন। ওই প্রচারণার জবাবেই ইউটিউবের এই পদক্ষেপ এলো।
এই প্রচারণার জন্য ২০১৬ সালে চালু করা ইউটিউব চ্যানেলটির কনটেন্টগুলোকে ইউটিউব ‘অনুপুযুক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করার আগ পর্যন্ত প্রতি মাসে চার হাজার জন পর্যন্ত নতুন গ্রাহক যুক্ত হচ্ছিল, এমনটাই বলা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সংবাদ সংস্থা মেইল অ্যান্ড গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনগুলোতে।
এই চ্যানেলের বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্যও কনটেনটগুলোতে একটি লেবেল দিয়ে দেয় ইউটিউব। ওই লেবেলে বলা হয় এই কনটেন্টগুলো ‘সব বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য উপযুক্ত নয়।’
এরপর ডামিনি কয়েকটি প্রতিবাদ কর্মসূচী আয়োজন করেন যেখানে সোয়াজিল্যান্ড-এর দুইশ’টিরও বেশি সাংস্কৃতিক দল অংশ নেয়। শনিবার পার্শ্ববর্তী দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানের প্রথম কর্মসূচী আয়োজিত হয়, খবর মেইল অ্যান্ড গার্ডিয়ান-এর।
এই কর্মসূচীতে অত্যন্ত ১২ জন নারী বুক খোলা রেখে প্ল্যাকার্ড হাতে অংশ নেন। এসব প্ল্যাকার্ডে গুগলের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তোলা হয়। একটি প্ল্যাকার্ডে “আমার স্তনযুগল অনুপুযুক্ত নয়” লেখা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে মেইল অ্যান্ড গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে।
মেইল অ্যান্ড গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ইউটিউবের এক মুখপাত্র বিবিসি-কে বলেন, রিড নৃত্যের ভিডিওগুলো তাদের নীতিমালা বিরোধী নয়, তারা ক্ষমাপ্রার্থী ও এই ভুল শোধরাতে পেরে আনন্দিত।