এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, “ফেইসবুক সব সময় ট্রাম্পবিরোধী ছিল। এই নেটওয়ার্ক সব সময় ট্রাম্পবিরোধী ছিল, ভুয়া সংবাদ, নিউইয়র্ক টাইমস (ক্ষমা চেয়েছে) আর ওয়াশিংটন পোস্টও ট্রাম্পবিরোধী ছিল। চক্রান্ত?...কিন্তু মানুষ ট্রাম্পের পক্ষে ছিল! বস্তুত, আমরা প্রথম নয় মাসে যা করেছি আর অর্থনীতি যেভাবে উন্নত হচ্ছে কোনো প্রেসিডেন্ট এমনটা করতে পারেননি।”
“প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সকালে দেওয়া টুইটে ফেইসবুক সব সময় তার বিরুদ্ধে ছিল বলে যে দাবি করেছেন আমি তার জবাব দিতে চাই”- মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই অভিযোগের জবাবে ফেইসবুক পোস্ট এভাবেই শুরু করেন জাকারবার্গ। তিনি বলেন, “প্রতিদিন আমি মানুষকে সংযুক্ত করতে আর সবার জন্য একটি সম্প্রদায় তৈরিতে কাজ করে যাই। আমরা সব মানুষকে একটি কণ্ঠ দেওয়ার ও সব ধারণার একটি প্লাটফর্ম তৈরির প্রত্যাশা করি।”
“ট্রাম্প বলেছেন ফেইসবুক নাকি তার বিরুদ্ধে। লিবারেলরা বলেন আমরা ট্রাম্পকে সহায়তা করেছি। উভয়পক্ষই তারা যে ধরনের কনটেন্ট ও ধারণা পছন্দ করেন না সেগুলো নিয়ে হতাশ। সব ধারণা নিয়ে কোনো প্লাটফর্ম এমনটাই হয়।”
‘অধিকাংশ লোক যা বলছেন তা থেকে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফেইসবুকের ভূমিকা আসলে ভিন্ন’ বলে দাবি করেছেন জাকারবার্গ। ফেইসবুকের এ ভূমিকাগুলোও তিনি তার পোস্টে তুলে ধরেন। জাকারবার্গের দাবি অনুযায়ী এই ভূমিকাগুলো হচ্ছে-
“আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এই নির্বাচনে বেশি মানুষের কণ্ঠ শোনা গেছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শতকোটি আলোচনা হয়েছে যা অফলাইনে কখনও হয়তো হয়নি। প্রতিটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, শুধু গণমাধ্যমে আসা বিষয়গুলোই নয়।”
“এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নির্বাচন ছিল যেখানে প্রার্থীদের যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট একটি প্রাথমিক মাধ্যম ছিল। প্রতিদিন কোটি কোটি অনুসারীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে প্রতি প্রার্থীর একটি ফেইসবুক পেইজ ছিল।”
“প্রার্থীদের বার্তা আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে অনলাইন বিজ্ঞাপনের পেছনে প্রচারণাগুলোতে কোটি কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে। যা কোনো অনিশ্চিত বিজ্ঞাপনের তুলনায় হাজার গুণ বলেই আমরা জানতে পেরেছি।”
“আমরা ‘গেট আউট দ্য ভোট’ প্রকল্প চালিয়েছি যা ২০ লাখের মতো মানুষকে ভোট নিবন্ধনে সহায়তা করেছে। এই বিষয়টি মাথায় রাখলে, এই প্রচেষ্টা ট্রাম্প আর ক্লিনটনের প্রচারণার মিলিত প্রচেষ্টার চেয়ে বেশি। এটি একটি বড় বিষয়।”
নির্বাচনের পর ফেইসবুকে ছড়ানো ভুয়া সংবাদ নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। সে সময় এই অভিযোগেরও জবাব দিয়েছিলেন জাকারবার্গ। আবারও সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেন, “নির্বাচনের পর, আমি এক মন্তব্যে বলেছিলাম ফেইসবুকে থাকা ভুয়া তথ্য নির্বাচনের ফলাফল বদলে দিয়েছে বলে যে ধারণা করা হচ্ছে তা পাগলামো। একে পাগলামো বলাটি অবিবেচক আচরণ ছিল আর আমি এটি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করি। বিষয়টি এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে তা আমলে না নেওয়ার মতো ন। কিন্তু আমরা সব সময় যে ডেটা দেখিয়ে এসেছি যে আমাদের বিস্তৃত প্রভাব- মানুষকে প্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একটি কণ্ঠ দেওয়া থেকে শুরু করে লাখ লাখ মানুষকে ভোট দিতে সহায়তা করা পর্যন্ত- তা নির্বাচনে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে।”