অ্যাপটির অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেছেন, চীনা সেন্সরশিপ ফিল্টারের কারণে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ছাড়া অ্যাপটিতে কোনো ভয়েস মেসেজ বা ছবি পাঠানো যাচ্ছে না। বুধবার সকাল পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক মনে হলেও এরপর সমস্যা আরও বাড়তে থাকে, বলা হয়েছে বিবিসি’র প্রতিবেদনে।
চীন অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে কঠোরভাবে দমন করছে, এরই প্রেক্ষিতে এমন সমস্যা শুরু হল বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির শেষে হোয়াটসঅ্যাপে কোনো ছবি, ভয়েস মেসেজ বা ভিডিও পাঠাতে না পারা নিয়ে ব্যবহারকারীদের অভিযোগ আসা শুরু হতে দেখা যায়। যদিও টেক্সট মেসেজ স্বাভাবিকভাবেই পাঠানো যাচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও এই সমস্যা ছিল।
এ দিকে চীন সরকার হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করেছে কিনা তা নিয়ে এখনও কিছু বলেনি। কোনো মন্তব্য করেনি মেসেজিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটিও, আবার ব্যবহারকারীদের এটিকে কোনো কারিগরি ত্রুটি হিসেবেও জানানো হয়নি।
বিবিসি’র বেইজিং বুরো কয়েক ঘণ্টা ধরে এই অ্যাপটি নিয়ে পরীক্ষা চালায়। এক্ষেত্রে তারা দেখে, বুধবার সকালে কোনো ভিপিএন ছাড়াই সব ফাংশন ঠিকভাবে কাজ করছে। এরপর থেকেই অ্যাপটিতে বাধা বাড়ছে বলে মনে হয়।
নিজেদের সর্বশেষ ইন্টারনেট সেন্সরশিপ প্রতিবেদনে মুক্তবাক প্রচারণা গোষ্ঠী ফ্রিডম হাউস বলে, হোয়াটসঅ্যাপ ১২টি দেশে বন্ধ করে রাখা হয়েছে, যা অন্য যে কোনো মেসেজিং অ্যাপের তুলনায় বেশি।
চীন অনলাইনে তাদের সেন্সরশিপ বাড়াচ্ছে। দেশটির সরকার আসন্ন কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস-কে সামনে রেখে নীতিমালা আরও কঠোর করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই কংগ্রেসে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিন তার নেতৃত্ব পাকাপোক্ত করতে চান, উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে।
সম্প্রতি চীনা ভিন্নমতালম্বী লেখক লিও শিয়াওবো-এর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলো পোস্ট, ব্যক্তিগত মেসেজ ও গ্রুপ চ্যাটগুলো ব্লক করে দেয় দেশটি। বর্তমানে দেশটিতে ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের সাইট ও অ্যাপ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। টেলিগ্রামের মতো অন্যান্য এনক্রিপটেড মেসেজিং সেবাগুলোও বন্ধ। বন্ধ করে রাখা হয়েছে গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনগুলোও, সেই সঙ্গে বিবিসিসহ বিভিন্ন বিদেশি সংবাদ সংস্থাগুলোর অ্যাকসেস সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
অনেক ব্যবহারকারী ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে এমন সীমাবদ্ধতা ভেঙ্গে ফেলছেন। ভিপিএন ব্যবহারে নীতিমালা আরোপের মাধ্যমে এটিও কঠোরভাবে দমনের অঙ্গীকার করেছে চীনা সরকার।