১০ বছরে আইফোন

১০ বছরে পা দিল স্মার্টফোন জগতে বিপ্লব আনা ডিভাইস অ্যাপলের আইফোন।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2017, 08:10 AM
Updated : 29 June 2017, 08:10 AM

২০০৭ সালের ২৯ জুন যাত্রা শুরু করেছিল আইফোন, এই ১০ বছরে বিক্রি হয়েছে শতকোটিরও বেশি। যাত্রার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন এসেছে অনেক। শুরুতে ছিল না অ্যাপস্টোর, ছিল শুধুই এটিঅ্যান্ডটি নেটওয়ার্কে সীমাবদ্ধ।   

শুরুতে বিক্রির অবস্থা খুব একটা ভালো না যাওয়ায়, সে বছর ছুটির মৌসুমে দাম কমিয়ে দিয়েছিল অ্যাপল। বুধবার অ্যাপলে এই ডিভাইস নির্মাণের পেছনে থাকাদের একজন টনি ফেডাল রয়টার্স-কে বলেন, “প্রথম বছরে অ্যাপলের ব্যবসায় মডেলটি একটি দুর্যোগ ছিল। দ্বিতীয় বছর আমরা এটি বুঝতে পারি আর ঘুরে দাঁড়াই।”

এক দশক আগে অ্যাপলের কিছু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য আইফোনের ধারণা ‘অবাক করা’ কিছুই ছিল। যদিও, সে সময় স্টিভ জবস-এর নেতৃত্বে থাকা অ্যাপল তার মধ্যেই আইপড দিয়ে কম্পিউটারকে ছাড়িয়ে যায়। 

শুরুর দিকের আইফোনগুলোতে স্থান শনাক্তকারী প্রযুক্তি সরবরাহ করত স্কাইহুক। এ প্রতিষ্ঠানের ডেভিড বায়েরস্টো বলেন, “স্টিভ জবস আমাদের প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতাকে ডাকতে যে ভয়েসমেইল পাঠিয়েছিলেন, তা এখনও আমাদের কাছে আছে। তিনি (স্কাইহুক প্রধান) ভেবেছিলেন তার সঙ্গে অফিসের কেউ তামাশা করছেন আর স্টিভ জবস-কে ফিরতি কল করতে তিনি দুই দিন সময় নেন।”

২০০৮ সালে অ্যাপ স্টোর উন্মোচন করে অ্যাপল, নতুন উচ্চতায় উঠে যায় আইফোন। এই স্টোরে অ্যাপ নির্মাতাদের আইফোনের জন্য অ্যাপ্লিকেশন বানানো ও বিতরণের সুযোগ দেয়। অ্যাপ নির্মাতাদের যে কোনো আয় থেকে একটা অংশ অ্যাপল কেটে রাখে। এখন এটাই হয়ে উঠেছে অ্যাপলের আয়ের অন্যতম উৎস। ২০১৬ সালে এ খাত থেকে প্রতিষ্ঠানটির আয় হয়েছে ২৪৩০ কোটি ডলার।

দশম বছরে আসতে পারে আইফোনের নতুন সংস্করণ আইফোন ৮। সেপ্টেম্বরেই এই ডিভাইস আনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে, এর দিকেই তাকিয়ে আছেন আইফোন ভক্ত আর বিনিয়োকারীরা। এতে নানা নতুন ফিচার আনা হতে পারে, যা দিয়ে পুরো নতুন একটি প্রজন্মকে হয়তো নিজেদের দিকে টেনে নেবে অ্যাপল। চলতি মাসে অ্যাপলের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উইস্ট্রোন-এর প্রধান নির্বাহী রবার্ট হং বলেন, এ বছর নতুন আইফোন ৮-এ বিল্ট ইন থাকবে ওয়্যারলেস চার্জিং।

“পানি নিরোধী এবং ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের মতো নতুন ফিচারগুলোতে এখন ভিন্নতা দরকার এবং পানি নীরোধী ফিচার আইফোন অ্যাসেম্বল প্রক্রিয়াও কিছুটা পরিবর্তন করবে,” বলেন হং। সেই সঙ্গে এই ডিভাইসটিতে আনা হতে পারে ৩-ডি ম্যাপিং সেন্সর আর ‘অগমেন্টেড রিয়ালিটি’ আপ ব্যবহারের সুবিধা।

কানাডীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকবেরি আর স্বদেশীয় প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট ডিভাইস-এর দখলে থাকা একটি বাজারে যাত্রা শুরুর ১০ বছর পর অ্যাপল এখন প্রধানত গুগলের অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যারের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে স্মার্টফোন বানাচ্ছে দক্ষিণ কোরীয় টেক জায়ান্ট স্যামসাংসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

বিশ্বের অধিকাংশ স্মার্টফোন এখন অ্যান্ড্রয়েডচালিত হলেও, অ্যাপল এখনও তাদের দামি ডিভাইসগুলো দিয়েই এই খাতে সবচেয়ে বেশি লাভ করে থাকে।

বাজার বিশ্লেষণা প্রতিষ্ঠান ইমার্কেটার-এর তথ্যমতে, দুইশ’ কোটিরও বেশি মানুষ এখন স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। অ্যাপল আর গুগলের মালিক প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট- দুই জায়গাতেই কাজ করা ফেডাল এই বিষয়টিকে সাফল্যের ছাপ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “এটি আমার হৃদয়কে উষ্ণ করে দেয় কারণ অ্যাপল ২ আর ম্যাক-এর দিয়ে এমন কিছুই করতে চেয়েছিলেন স্টিভ।”

“শেষ পর্যন্ত এটি এই জায়গায়, ৩০ বছর পর”- যোগ করেন তিনি।