বড় ধরনের এই সাইবার হামলার পেছনে ‘উত্তর কোরিয়ার হাত রয়েছে’- এই তত্ত্ব অন্যতম আলোচ্য হলেও সিদ্ধান্ত টানার সময় এখনও আসেনি বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ল্যাজারাস গ্রুপ নামে অত্যন্ত উঁচুমানের একটি হ্যাকারগোষ্ঠী এই ঘটনার পেছনে ভূমিকা রেখে থাকতে পারে। চীনের এই গোষ্ঠী উত্তর কোরিয়ার পক্ষে তৎপরতা চালায় বলে ব্যাপক জনশ্রুতি আছে।
২০১৬ সালে সাইবার হামলা চালিয়ে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ও ২০১৪ সালে সনির হলিউড স্টুডিওতে বহুল আলোচিত সাইবার হামলার সঙ্গে জড়িয়ে ‘ল্যাজারাসের’ নাম এসেছিল।
বিবিসি বলছে, গুগলের নিরাপত্তা গবেষক নিল মেহতার নতুন উদ্ভাবনের পর নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা খুব সতর্ক হয়ে সর্বশেষ হামলার ঘটনার ল্যাজারাসের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ভাবছে।
“সন্দেহভাজন ল্যাজারাস গ্রুপের তৈরি আগের সাইবার হামলায় ব্যবহৃত ‘টুলস’ ও চলমান সাইবার হামলায় ব্যবহৃত ‘ওয়ানাক্রাই’ নামে সফটওয়্যারের ভেতরের কোডের মধ্যে সামঞ্জস্য পাওয়া গেছে।”
এছাড়াও সন্দেহজনক আরও ক্লু রয়েছে, যে বিবেচনার দাবি রাখে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার বিশ্বের ১০০টির মতো দেশে একটি ‘র্যানসমওয়্যার’ ছড়িয়ে পড়ে, যাতে আক্রান্ত হয় স্বাস্থ্য ও টেলিকমসহ বিভিন্ন খাতের বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক।
বাংলাদেশেও এই পর্যন্ত অন্তত ৩০ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছেন দেশের সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা।
তবে বিষয়টি আরও তদন্তের দাবি রাখে বলে মনে করেন অধ্যাপক ওডওয়ার্ড।
বিষয়টি নিয়ে এর মধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
রুশ সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ক্যাসপারস্কি বলছে, “ওয়ানাক্রাইয়ের উৎপত্তি নিয়ে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার নিল মেহতার।”
তবে এবিষয়ে দৃঢ় সিদ্ধান্তে আসার আগে ওয়ানাক্রাইয়ের আগের সংস্করণগুলোর বিষয়ে আরও অনেক তথ্য জানতে হবে বলে কোম্পানিটির অভিমত।
“বাংলাদেশ ব্যাংকে হামলার ঘটনার শুরুর দিকে নজর দিলে দেখা যাবে সেখানে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যেগুলো ল্যাজারাস গ্রুপের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে।
“একটা সময়ের পরে আরও প্রমাণ হাজির হওয়ার পর ওই সংযোগের বিষয়ে আরও জোরের সঙ্গে বলা গেছে। এখন শূন্যস্থান পূরণে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।”
নিশ্চিত না হয়ে শুধু ঐকমত্যের ভিত্তিতে সাইবার হামলার বিষয়ে ইঙ্গিত করা খুবই কঠিন।
সনি পিকচার্সে হামলার ঘটনাই ধরা যাক, ওই ঘটনায় জড়িত থাকার থাকার কথা উত্তর কোরিয়া স্বীকার করেনি। কিন্তু নিরাপত্তা গবেষক ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই তত্ত্বে বিশ্বাস রেখেও এটার ‘ভুয়া’ হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি।
একই ধরণের কৌশল ব্যবহার করে এই হামলা উত্তর কোরিয়া থেকে উৎপত্তি হয়েছে এমনটা দেখানো দক্ষ হ্যাকারদের পক্ষেও সম্ভব।