গির্জায় তিনি পোকিমন গো খেলছিলেন!

গির্জায় পোকিমন গো খেলার দায়ে এক রুশ ব্লগারকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2017, 09:39 AM
Updated : 12 May 2017, 09:39 AM

বিবিসি-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েকাতেরিনবার্গ শহরের একটি আদালতে মামলার রায়ে রুজলান সোকোভস্কি নামের ওই ব্যক্তিকে ধর্ম বিশ্বাসী ব্যক্তিদেরকে ব্যাঙ্গ করা এবং ঘৃণাত্মক কনটেন্ট প্রচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

বিচারের সময় সোকোভস্কি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। বর্তমানে তার বয়স ২২ বছর। রাশিয়ার বিখ্যাত অর্থোডক্স গির্জায় পোকিমন গো খেলার ভিডিও প্রকাশের পরপরই ২০১৬ সালের অগাস্টে তাকে গেপ্তার করা হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি গির্জায় পোকিমন গো খেলছেন। এতে তাকে খৃষ্ট ধর্ম নিয়ে ব্যাঙ্গ করতেও দেখা গেছে। পোকিমন গো-এর একটি কার্টুন চরিত্রকে ‘যিশু খৃষ্ট’-এর সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।

সোকোভস্কি বলেন, তিনি গির্জায় পোকিমন খেলার সিদ্ধান্ত নেন কারণ তিনি খবরে দেখেছেন, অনেকে বলছে যারা এ কাজ করবেন তাদেরকে জরিমানা বা কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

ভিডিওটি প্রকাশের কিছু সময়ের পরই সোকোভস্কির বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালে একই ধরনের মামলায় ‘পুসি রায়ট’ নামের একটি ব্যান্ডকে শাস্তি দেওয়া হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ক্যাথিড্রাল আন্দোলন করায় তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয়।

বিচারকালে আদালতে সোকোভস্কি’র মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, “আমি বিশ্বাস করি আসামিকে দায় থেকে মুক্তি দেওয়ার কোনো কারণ নেই। এখানে তাকে জরিমানা করারও কোনো কারণ নেই। আমি তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার অনু্রোধ জানাচ্ছি।”

আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর দাবি মোতাবেক তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে, এদিন সোকোভস্কিকে আরেকটি অভিযোগের জন্য দোষী করা হয়েছে। “অবৈধভাবে বিশেষ প্রযুক্তি সরঞ্জাম পাচারের” অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সোকোভস্কির বাড়ি তল্লাশি করে তার একটি কলমের মধ্যে ক্যামেরা পাওয়া গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

রায় প্রকাশের পর সোকোভস্কি বলেন তিনি এতে স্বস্তি পেয়েছেন। “শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আমি জানতাম না শাস্তি কী হবে, তাই আসলে কারাদণ্ডের সময় কতো হবে তা নিয়ে আমি খুব ভীত ও ঘাবড়ে ছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “ইতোমধ্যেই তিনি ধর্ম বিশ্বাসীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। যেভাবে তিনি ভিডিও প্রচার করেছেন তা রুশ সমাজের জন্য বিদ্রুপ ছিল।”

এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে কিনা তা নিয়ে তার আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করার কথা জানিয়েছেন সোকোভস্কি।