২০১৬ সালে এই সমস্যার কারণে সে বছর ছাড়া নিজেদের এই ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনটিকে চিরতরে বাজার থেকে উঠিয়ে নিতে বাধ্য হয় দক্ষিণ কোরীয় ইলেকট্রনিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্যামসাং কর্মকর্তারা জানান, হাজার হাজার ডিভাইস ও ব্যাটারি নিয়ে সামগ্রিক পরীক্ষা চালানোর পর ডিভাইসটির হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারে কোনো ত্রুটি থাকার ধারণা বাতিল করে দিয়েছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ও স্বাধীন তদন্তে “নোট ৭ ঘটনার জন্য ব্যাটারিগুলো দায়ী ছিল” বলে সিদ্ধান্ত পাওয়া গেছে বলেও জানান তারা।
ব্যাটারির জন্য স্মার্টফোনটির কেসিং খুবই ছোট ছিল। এর ফলে শর্ট-সার্কিট হয়ে আগুন ধরে। কিন্তু পরে আলাদা একটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাটারি ব্যবহারের পরও একই সমস্যা রয়ে যায়।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল-এ স্যামসাংয়ের মোবাইল ব্যবসায় প্রধান কোহ ডং-জিন বলেন, “আমরা আমাদের গ্রাহকদের যে অসুবিধাও উদ্বেগে ফেলেছি তার জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।” আসন্ন এস৮ স্মার্টফোনসহ স্যামসাংয়ের ভবিষ্যতের অন্যান্য ফোনগুলোতে আর অগ্নিঝুঁকি থাকবে না বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এক বিবৃতিতে স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, “ব্যাটারি নকশা ও উৎপাদনে সৃষ্ট হওয়া ত্রুটি ধরতে না পারায় আমরা আমাদের ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি। এমনটা যাতে আর কখনও না হয় সেজন্য আমরা কয়েকটি সংশোধনী পদক্ষেপ নিয়েছি।”
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নিজেদের উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণ নতুন করে ঢেলে সাজানোর অঙ্গীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি, জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান।
স্যামসাংয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, “আমাদের তদন্তে গ্যালাক্সি নোট ৭-এর হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এবং যন্ত্রাংশ সংযোজন, মান নিশ্চয়তার পরীক্ষা আর সরবরাহের মতো এ সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগুলোসহ সবগুলো দিক পরীক্ষা করা হয়েছে।”
প্রতিষ্ঠানটির সূত্রমতে, সাতশ’ প্রকৌশলী ও গবেষক ২০ হাজারেরও বেশি সম্পূর্ণ প্রস্তুত গ্যালাক্সি নোট ৭ ও তিন লাখের বেশি ব্যাটারি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন।
নোট ৭ -এ ব্যবহৃত আসল ব্যাচের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিগুলোর অভ্যন্তরীণ গঠনে সমস্যা খুঁজে পাওয়া গেছে। এই ত্রুটির কারণে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক ইলেক্ট্রোডগুলোর স্তর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাটারিগুলোর এক কোণা দেবে গিয়ে ঋণাত্মক ইলেক্ট্রোডস-এর স্তর বাকিয়ে ফেলে।
পরে সরিয়ে আনা ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আনা ব্যাটারিগুলোতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক ইলেক্ট্রোডস-কে আলাদা করতে ব্যবহৃত অত্যন্ত চিকন উপাদান ফেটে গিয়ে আগুন ধরায়।