ভুয়া সংবাদ লড়াইয়ে বিবিসি

সত্য খবরের বেশে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া সংবাদ বের করতে ও খবরের সত্যতা যাচাইয়ে একটি দল গঠন করছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2017, 01:07 PM
Updated : 15 Jan 2017, 01:07 PM

অনলাইনে ভুয়া তথ্য ছড়ানো নিয়ে রাজনীতিবিদ ও সংবাদ সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিবিসি’র বার্তা প্রধান জেমস হার্ডিং বলেন, বিবিসি  “মিথ্যা, বিকৃত ও অতিরঞ্জিত সংবাদের বিরুদ্ধে লড়াই” চালিয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, “বিবিসি পুরো ইন্টারনেট সম্পাদনা করতে পারবেনা, কিন্তু আমরা স্রেফ বসেও থাকব না। আমরা ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের সবচেয়ে জনপ্রিয় সংবাদগুলোর সত্যতা যাচাই করব।”

“আমরা কীভাবে সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারি, তা দেখতে আমরা বিশেষত ফেইসবুকের সঙ্গে কাজ করছি। এখানে আমরা সংবাদের বেশে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়তে দেখি, আমরা একটি রিয়ালিটি চেক প্রকাশ করব।”

এই রিয়ালিটি চেক নিয়ে তিনি বলেন, “আর আমরা চাই রিয়ালিটি চেক একটি জনসেবার চেয়েও বেশি হবে, আমরা একে ব্যপক জনপ্রিয় করতে চাই। আমরা অনলাইন, টিভি ও রেডিও’র ধরন ও ফরম্যাট ব্যবহার লক্ষ্য করব- এটি নিশ্চিত করবে যে সত্য খবর মিথ্যার চেয়ে বেশি আকর্ষণীয়।”

ব্রেক্সিট আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো বড় ঘটনাগুলোতে ভুয়া সংবাদ ব্যপকহারে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই ছড়ানো হয় শুধু মানুষকের দেখিয়ে বিজ্ঞাপনী আয় অর্জনের লক্ষ্যে, জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান। সবচেয়ে বিস্তৃত পরিসরে ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার প্লাটফর্ম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুক, বলা হয়েছে দৈনিকটির প্রতিবেদনে। 

যেসব কনটেন্ট ভুয়া ও জনগণের মধ্যে ভুল তথ্য ছড়াতে প্রকাশ করা হয়েছে আর যেগুলো দেখলে লোকে মনে করবে এটি কোনো নামকরা সংবাদ সংস্থার প্রকাশ করা- এমন কনটেন্ট-এর দিকে নজর দেবে বিবিসি’র রিয়ালিটি চেক দল। 

ভুয়া সংবাদ নিয়ে লড়াইয়ে বিবিসি’র এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এল, যখন অনলাইনে ছড়ানো বিভিন্ন ভুয়া সংবাদ নিয়ে একটি স্পর্শকাতর সময় যাচ্ছে। সম্প্রতিই এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন- “আপনারা ভুয়া সংবাদ।”

ভুয়া তথ্য শনাক্তে বিবিসি’র এই পদক্ষেপ আরও ‘ধীরগতির সংবাদ’ আনার চেষ্টার অংশ বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। এক্ষেত্রে গভীর বিশ্লেষণের মাধ্যমেও জনগণকে সংবাদ বুঝতে সহায়তা করা হবে।

নতুন এই পরিকল্পনায় বিশেষজ্ঞদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরির কথাও রয়েছে। এর মাধ্যমে বিবিসি’র কর্মীদের নিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি ‘ইনটেলিজেন্স ইউনিট’ বানানো হবে। এই লক্ষ্যে নতুন নতুন ভাষায় পৌঁছাতে সংগ্রহ করা হয়েছে ২৯ কোটি পাউন্ড। 

হার্ডিং বলেন, “এই সংবাদ কীভাবে আসছে তাও আমাদের ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। আমাদের সংবাদে ধীরগতি প্রয়োজন, যে সংবাদে আরও গভীর তথ্য, তদন্ত, বিশ্লেষণ, বিশেষজ্ঞ মত থাকবে- যা আমাদের কাছে আমরা যে বিশ্বে বাস করছি তা বুঝতে সহায়তা করবে।”