কোনো ছবি বা আঁকা বিষয়ের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত লেখা জুড়ে দিয়ে ভিন্ন কৌতুহলউদ্দীপক অর্থ তৈরি করাকে মেমে বলা হয়। সাধারণত সামাজিক মাধ্যমে কৌতুককর বিষয় হিসেবেই মেমে’র বহুল ব্যবহার হয়ে থাকে।
স্কটল্যান্ড-এর পূর্ব গ্লাসগো-তে বসবাসকারী ক্রেইগ বায়ার্ন নামের ৩০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি অ্যাপের্ট সিনড্রোমে ভুগছেন। এটি একটি বিরল বংশগত রোগ, যেখানে একটি শিশুর মাথা সামনে থেকে পেছনের দিকে ছোট হতে থাকে কিন্তু মুখ ক্রমান্বয়ে চওড়া হতে থাকে। এই রোগে মুখের হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং আঙ্গুল, বিশেষত পায়ের আঙ্গুল যুক্ত অবস্থায় থাকে।
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার বায়ার্ন-এর ভাই থমাস টুইটারে দেখতে পান তার ভাইয়ের একটি ছবিকে মেমে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক বছরের পুরানো ঐ ছবিতে বায়ার্ন গ্লাসগো সেল্টিক ফুটবল দলের মাঠে স্মিত হাস্যে তার দলের শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। একটি আক্রমণাত্মক ক্যাপশন লিখে এক টুইটার ব্যবহারকারী এই ছবি শেয়ার করেন।
এই ঘটনায় হতাশ হওয়া বায়ার্ন-এর পরিবারের পক্ষ থেকে তার বাবা জানান, ছবিটি অনেক রাতে টুইটারে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই তারা টুইট করা ব্যক্তিকে তা সরিয়ে নিতে বলার চেষ্টা করেছেন যাতে কয়েকশ’ বার রিটুইট হওয়া আর অনেক লাইক পাওয়া এই ‘অস্বস্তিকর’ ছবি তার ছেলে বার্য়ান-এর চোখে না পড়ে। পোস্টদাতা অনুরোধ করার পরেও তা সরিয়ে না নেওয়ায়, দুর্ভাগ্যবশত বায়ার্ন তা দেখতে পান। বায়ার্নের বাবা মানুষের অঙ্গহানি ও শারিরীক বিকৃতি নিয়ে কাজ করা দাতব্য সংস্থা ‘চেইঞ্জিং ফেইসেস’ এবং পুলিশকে এই ঘটনার বিষয়ে অবগত করেছেন বলেও দাবি করেন।
“আমি অনেক হতাশ হয়েছি”- দৈনিকটিকে বলেন বায়ার্ন। “আমি ঘুম থেকে উঠে দেখে ভেবেছি আমি দু্ঃস্বপ্ন দেখছি।”
পরে চেইঞ্জিং ফেইসেস-এর সহায়তায় এই পোস্ট মুছে দেওয়া হয় এবং টুইট করা অ্যাকাউনট স্থগিত করে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বায়ার্নের টুইটার অনুসারী সংখ্যা ৪৭ থেকে বেড়ে ৪৫০০-তে দাঁড়ায়। তারা সবাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁকে সমর্থন যোগান।
“মানুষ আমাকে সমর্থন করছেন, সাহস দিচ্ছেন। এখন আমি সত্যিই ভালো বোধ করছি”- বলেন তিনি।
স্কটল্যান্ড পুলিশের এক মুখপাত্র বলেন, “৫ জানুয়ারি ২০১৭-তে আক্রমণাত্মক যোগাযোগের এমন একটি প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। অনুসন্ধান চলছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত পুরো ঘটনাকে অক্ষম বা ত্রুটিপূর্ণ মানুষের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ হিসেবেই দেখছে।”