স্মার্টফোন ডিসপ্লে'র পেছনে থাকা জীবনঝুঁকি

'দুর্ঘটনাপ্রবণ খনিজদ্রব্যগুলোর' উপর নির্ভরতা শেষ করতে গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি ঘটিয়েছে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এবং ইনটেল।

রিয়াদ মোর্শেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2016, 01:16 PM
Updated : 2 Oct 2016, 01:16 PM

দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এমন খনিজদ্রব্যগুলোর মধ্যে টাংস্টেন, টিন, ট্যান্টালাম এবং সোনা অন্তর্ভুক্ত। কঙ্গো'র সামরিক নেতারা এই খনিগুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন আর কাজ করেন কারাগার বন্দীরা।

এই খনিগুলোতে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান- কোবাল্ট তৈরি হয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই খনিজ পদার্থের উত্তোলনও স্বাভাবিক নয় বলে জানিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক মার্কিন সাইট বিজনেস ইনসাইডার। কোবাল্ট ব্যবহার করা হয় লিথিয়াম ব্যাটারিতে, যা স্মার্টফোন থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি সরবরাহ করে।

মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক তদন্তে খনিগুলোর কর্মীদের দুর্দশা অবস্থার প্রকাশ পেয়েছে। এই ধরনের কর্মীদের বলা হয় 'শৈল্পিক খনিশ্রমিক', যারা প্রতিষ্ঠানের প্রত্যক্ষ কর্মী নন তবুও তারা নিজেদের জীবিকার জন্য তাদের আশপাশের খনি গর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা কোনো ধরনের যন্ত্র ছাড়াই কোবাল্ট খোঁজেন, প্রায়ই খালি পা’য় থাকেন, এমনকি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়েই কাজ করেন। তাই হতাহতের ঘটনা প্রতিনিয়তই চলছে, বাদ পড়ছে না খনিতে কাজ করা শিশুরাও।

কোবাল্ট সংগ্রহের পর তা নদীর পানিতে পরিষ্কার করা হয়। এই পদ্ধতির কারণে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে, যা জন্ম জটিলতাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য দায়ী। প্রতিবেদনে জানানো হয়, একদিনে একজন খনিশ্রমিক দুই থেকে তিন ডলার আয় করে থাকেন।

অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই কোবাল্ট সংগ্রহ প্রক্রিয়া নিয়ে সতর্ক, কিন্তু অবস্থা উন্নতিকরণে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পদক্ষেপ আর আগ্রহ এক রকম নয়।

অ্যাপলের সামাজিক দায়িত্ববিষয়ক সাপ্লাই চেইন ইনচার্জ-এর উর্ধ্বতন পরিচালক পওলা পিয়ার্স জানান, "অ্যাপল তাদের প্রধান সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এগুলোর মধ্যে কোবাল্ট উৎপাদন অবস্থাকে সঠিক করা এবং দারিদ্র্য দূর করা অন্তর্ভুক্ত।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই বিষয়ে খুবই নগন্য আগ্রহী দেখা যায় বলে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। কর্মী এবং পরিবেশ বিষয়ে কাজ করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গ-এর এক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের পরামর্শদাতা লারা স্মিথ। তিনি জানান, কোবাল্ট খনি থেকে সংগ্রহ এখনও এমন একটি বিষয়, যা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নজরে আনছে না।

তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠানগুলো অজ্ঞতার কথা স্বীকার করতে পারবে না। তারা যদি বুঝতে চায়, তারা বুঝতে পারবে।"