অ্যাসাঞ্জ-এর পরোয়ানা থাকছেই

তথ্য ফাঁসকারী উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিইয়ান অ্যাসাঞ্জ-এর উপর থাকা আটকের পরোয়ানা অব্যাহত রেখেছে সুইডেনের এক আপিল আদালত।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2016, 10:24 AM
Updated : 18 Sept 2016, 10:24 AM

ছয় বছর ধরে চলা আইনজীবীদের সঙ্গে দীর্ঘ আইনি বিরোধ নিষ্পত্তিতে ও অক্টোবরে অ্যাসাঞ্জ জিজ্ঞাসাবাদের হাত থেকে রেহাই পেতে করা আপিলে শুক্রবার এই রায় দেয় আদালত, জানিয়েছে রয়টার্স।

২০১২০ সালে ধর্ষণের এক অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন করতে সুইডিশ কর্তৃপক্ষ ৪৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে। যদিও অ্যাসাঞ্জ এই ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "কোর্ট অফ আপিল, ডিসট্রিক্ট কোর্ট-এর মূল্যায়ন শেয়ার করেছে, আর তা হচ্ছে- ওই ধর্ষণের পেছনে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ রয়েছেন বলে এখনও সন্দেহ করা হচ্ছে।"

২০১২ সালে ইকুয়েডরের লন্ডন দূতাবাসে অবস্থান নেওয়ার মাধ্যমে অ্যাসাঞ্জ তার সম্ভাব্য বহিঃসমর্পণ এড়ান। তাকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে, বর্তমানে এমন আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে উইকিলিকস-এর কার্যক্রম নিয়ে একটি অপরাধ তদন্ত এখনও চলমান।

অ্যাসাঞ্জ-এর সুইডিশ আইনজীবী পার স্যামুয়েলসন জানান, তিনি এখনও তার মক্কেলের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেননি। তিনি বলেন, "আমরা আপিল করব, আমরা যদি না করি তবে তা অদ্ভূত হবে।"

১৭ অক্টোবর ওই লন্ডন দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জ-কে জিজ্ঞাসাবাদের দিন ধার্য করেছে ইকুয়েডর। এই জিজ্ঞাসাবাদ ইকুয়েডরিয়ান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীই সম্পন্ন করবেন বলে জানিয়েছেন সুইডিশ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

জাতিসংঘের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে ইকুয়েডর দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জের অবস্থানকে ‘বেআইনিভাবে আটক’ রাখা বলে মত দেওয়ার পর তার আইনজীবীরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল আবেদনের এ পদক্ষেপ নিলেন।

দূতাবাস থেকে বেরোলেই গ্রেপ্তার হওয়ার ভয় থাকায় অ্যাসাঞ্জ ২০১৪ সালে দূতাবাসে তাকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে আটক রাখার’ অভিযোগ জানিয়েছিলেন জাতিসংঘকে। জাতিসংঘ প্যানেল শেষ পর্যন্ত অ্যাসাঞ্জের পক্ষে মত দেয়।

সুইডেনে অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলাটি হয় ২০১০ সালে। অ্যাসাঞ্জ এ অভিযোগ অস্বীকার করে এলেও বিষয়টি নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সুইডিশ কর্তৃপক্ষ। অ্যাসাঞ্জের আশঙ্কা, সুইডেনে গেলে দেশটির সরকার তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল অ্যাসেঞ্জের উইকিলিকস ওয়েবসাইট। এতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরাগভাজন হন অ্যাসাঞ্জ। গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে অ্যাসেঞ্জের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ফৌজদারি মামলা রয়েছে।

ইকুয়েডর দূতাবাস অ্যাসেঞ্জকে আশ্রয় দিলেও গ্রেপ্তারের ভয়ে সেখান থেকে বের হতে পারছেন না তিনি। অ্যাসেঞ্জের দাবি, তার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। কারণ তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশেগুলোতে যেতে পারছেন না।

যদিও যুক্তরাজ্য এবং সুইডেন উভয়ই অ্যাসেঞ্জের মানবাধিকার হরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।