হ্যাকিংয়ে 'ভণ্ডুল' অস্ট্রেলিয়ার আদমশুমারি

সম্ভাব্য সাইবার হামলার হুমকি এবং ধীর গতির ইন্টারনেট সেবার জন্য বুধবার অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার প্রথম 'অনলাইন' জাতীয় আদমশুমারিতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

তাহমিন আয়শা মুর্শেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2016, 02:11 PM
Updated : 10 August 2016, 02:14 PM

অস্ট্রেলিয়ার প্রধান পরিসংখ্যানবিদ ডেভিড ক্যালিশ, অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন রেডিও কে বলেন, "এটি মূলত একটি আক্রমণ ছিল এবং আমাদের ধারণা এটি দেশের বাইরে থেকে হয়েছে।"

রয়টারকে ক্যালিশ নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস-এ (এবিএস) জমা হওয়া প্রায় ২৩ লাখ ফর্মের কোন ডেটাই চুরি হয়নি।

পাঁচ বছর পর পর অনুষ্ঠিত এই আদমশুমারিতে উঠে আসে অস্ট্রেলিয়ার দুই কোটি চল্লিশ লক্ষ মানুষের জীবনযাপনে বিস্তারিত বিবরণ, আয়, ধর্মীয় ও জাতিগত ব্যাকগ্রাউন্ড, বৈবাহিক অবস্থা, ইত্যাদি।

আদমশুমারি পরিচালনার দায়িত্ত্বে থাকা মন্ত্রী, মাইকেল ম্যাককোর্মাক অবশ্য এমন অনলাইন 'ক্র্যাশ' কে 'আক্রমণ' বলতে নারাজ। অয়েবসাইট ওভারলোডিংকে 'ইচ্ছামূলক' চিহ্নিত করে তিনি একে 'ডিনায়াল অফ সার্ভিস' বলে অভিহিত করেন।

মন্ত্রী আরও জানান, সাইটটি ভারি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমনভাবে সাজানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ব্যবহারকারিরা রাউটার অভারলোডিং এর সম্মুখীন হন, যার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পরবর্তিতে ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

"এটি 'হ্যাক' ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে আদমশুমারির তথ্য সংগ্রহ ঠেকানো।" বলেন ম্যাককোমার্ক।

১০৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো কর্তৃপক্ষ কেন আদমশুমারি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হল তার বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে। কিছু রাজনীতিবিদ আর প্রাইভেসি অ্যাডভোকেটরা এই ঘটনাকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছেন।

কিছু স্বতন্ত্র সিনেটর এই আদমশুমারি বর্জন করেছিলেন কারণ প্রথমবারের মতো এই আদমশুমারিতে অস্ট্রেলিয়ানদের নিজেদের 'সনাক্তকরণ' বাধ্যতামূলক ছিল।

"এটি অস্ট্রেলিয়ান জনগণের গোপনীয়তার জন্য অসম্মানজনক।" বলেছেন একজন প্রাইভেসি আইনজীবী আনা জনস্টন।

এই ব্যর্থতায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল। তিনি ইন্টারনেটের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ধার্য করা ২৯২০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছিলেন। ওই অর্থে অস্ট্রেলিয়ায় আবাসিক এলাকায় ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক বসানোর কথা ছিল।

আকামাই প্রযুক্তি (যা বিশ্বের ইন্টারনেট গতি নিয়ে কাজ করে)এর  সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার ইন্টারনেট সেবা গতির দিক থেকে সারা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে ৪৮তম স্থানে রয়েছে।