হাইপারলুপ নিয়ে কাজ করছে যারা

২০১৩ সালের আগস্টে যাতায়াত ব্যবস্থায় হাইপারলুপের ধারণাটি প্রকাশ করে সবাইকে চমকে দেন টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক। তার হাইপারলুপের এ স্বপ্নকে সত্যি করতে হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।

নাজিয়া শারমিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2016, 04:08 PM
Updated : 4 July 2016, 04:08 PM

৪৪ বছর বয়স্ক ধনকুবের ইলন মাস্কের মস্তিষ্কপ্রসূত অন্যান্য ধারণাগুলোর মতোই হাইপারলুপের ধারণাটি বিস্ময়কর উদ্ভাবনী চিন্তাধারার প্রকাশ। তিনি সুপারসনিক ট্র্যান্সপোর্টেশন সিস্টেম এর উপর ভিত্তি করে বায়ুপূর্ণ একটি টিউবের মধ্যে দিয়ে এই হাইপারলুপটি চলাচল করাবেন। এই প্রযুক্তিটিকে বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “একটি কনকর্ডের মধ্যে ক্রস এবং একটি বায়ুপূর্ণ হকি টেবিল।”

এটি ১০০ শতাংশ সোলার পাওয়ার প্রযুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত যা আবহাওয়ার অবস্থা নিরাপদ রাখবে। শুধু তাই নয় এটি একটি প্লেনের থেকেও দ্বিগুণ বেগে ভ্রমণে সক্ষম। তবে মাস্ক কেবল ধারণটাই দিয়েছেন কিন্তু তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান এটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। তিনি বলেছেন, “(তারা) একটি ফাংশনাল হাইপারলুপ প্রোটোকলের উন্নতি দ্রুততর করতে সাহায্য করতে আগ্রহী।”

অবশেষে ২০১৫ সালের জুনে শুরু হয় স্পেসএক্স হাইপারলুপ পড কম্পিটিশন নামের প্রতিযোগিতা, এ গ্রীষ্মেই তার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রতিযোগী দলগুলো তাদের প্রোটোটাইপ পডগুলো ক্যালিফোর্নিয়ার হাওথর্ন-এ অবস্থিত স্পেসএক্স-এর টেস্ট ট্র্যাকে পরীক্ষা করে দেখবে। চূড়ান্ত পর্বের নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ এখনও জানানো হয়নি, যার ফলে প্রতিযোগী দলগুলোর এই গ্রীষ্মের যে কোনো সময় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হচ্ছে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নিয়েছে।

পৃথিবীর ২৬ টি দেশ ও ৪০০ জনের বেশি কর্মচারী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হাইপারলুপ ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলজি বর্তমানে এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। তারা ইতোমধ্যে সেন্ট্রাল ক্যালিফোর্নিয়ায় পাঁচ মাইলের একটি পরীক্ষামূলক ট্র্যাকের ব্যবস্থা করেছে। আশা করা হচ্ছে ২০১৮ সালের মধ্যে এটি যাত্রীদের জন্য চালু করা হবে।

হাইপারলুপ ওয়ান-ও ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিষ্ঠান। উত্তর লাস ভেগাসের মরুভূমিতে এরা আধা মাইল দীর্ঘ পরীক্ষামূলক ট্র্যাকের ব্যবস্থা করেছে।

গত মাসে একটি খোলা বাতাসে একটি পরীক্ষামূলক ট্র্যাক পরিচালনা করে যা মাত্র ১.১ সেকেন্ডে ঘণ্টায় ১১৬ মাইল গতি অর্জন করে।

প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি আট কোটি ডলারের ‘সিরিজ বি’ সম্পন্ন করেছে যাকে এসএনসিএফ নামক একটি ফরাসী রেলওয়ে প্রতিষ্ঠান অর্থপ্রদান করছিল।

গত শনিবার, প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার সুম্মা গ্রুপ এর অংশীদারিত্বের কথা প্রকাশ করে। এই অংশীদারিত্বের কারণ তারা মস্কো সাবওয়ে ব্যবস্থায়ও একটি একটি আন্তর্মহাদেশীয় পথ তৈরি করতে চায়।

হাইপারলুপ প্রযুক্তি এখনও প্রযুক্তি, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানা প্রকার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

হাইপারলুপের এমন ধারণা এই প্রথম বলা হলেও বলা হয় ১৯০৮ সালে রবার্ট গডার্ড এমনই একটি ধারণা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।