ফের বেজোস-কে ট্রাম্পের আক্রমণ

অনলাইন খুচরা বিক্রেতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন প্রধান জেফ বেজোস-এর বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধাবস্থান নিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইফতেখার আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2016, 06:18 PM
Updated : 15 May 2016, 06:18 PM

এ খবর প্রকাশের আগের বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজে এক সাক্ষাতকারে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তার পুরনো 'অসততার অভিযোগে'র পুনরাবৃত্তি করেন তিনি। নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী দল ডেমোক্রেট মনোনয়ন প্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটনের ক্ষেত্রে যতটা না শক্ত, বেজোসের বিপরীতে তার চেয়েও বেশি শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

এ ছাড়াও ট্রাম্প বলেন, বেজোস তাকে নিয়ে 'উদ্বিগ্ন' কারণ তিনি ভাবেন শুল্ক ফাঁকির প্রশ্নে ট্রাম্প তার মুখোমুখি হবেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "তিনি মনে করেন, আমি তার বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ে লড়ব, কারণ অ্যান্টিট্রাস্ট নিয়ে তার বিশাল সমস্যা আছে।"

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ট্রাম্প অ্যামাজনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাটি কিনে নেওয়ার অভিযোগ তুলে টুইটারে ঝড় তোলেন। তিনি বলেন, অ্যামাজনকে শুল্ক পরিশোধ ও তদন্তের ক্ষেত্রে ব্যাপক ছাড় দিতে পত্রিকাটি যাতে ওয়াশিংটনের রাজনীতিবিদদের প্রভাবিত করে, এ উদ্দেশ্যেই অ্যামাজন এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

এ ছাড়াও, চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে টেক্সাস-এর ফোর্ট ওর্থ-এ এক প্রচারণা র‌্যালিতে ট্রাম্প তার বক্তব্যে অ্যামাজন ও বেজোসকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বসেন।

তিনি বলেন, "জেফ বেজোসকে আমি সম্মান করি, কিন্তু তিনি রাজনৈতিক প্রভাবের জন্য ওয়াশিংটন পোস্ট-কে কিনে নিয়েছেন। অ্যামাজন তার দখলে। অ্যামাজন যাতে সুবিধা পায় তাই তিনি রাজনৈতিক প্রভাব চান। আর আমি যদি প্রেসিডেন্ট হয়েই যাই, তা তাদের জন্য বিশাল সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।"

তবে ওয়াশিংটন পোস্ট-এর সম্পাদক মার্টি ব্যারন ট্রাম্পের তোলা এসব অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দেন।

তিনি বলেন, "ওয়াশিংটন পোস্টের সংবাদকর্মীদের দায়িত্বে নিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে বলছি, আমি জেফ বেজোস-এর কাছ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বা অন্য কোনো বিষয়েই কোনো ধরনের নির্দেশনা পাইনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় দলগুলোর মনোনীত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে খুঁটিনাটি বিস্তারিত প্রকাশ করা ওয়াশিংটন পোস্টের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের মধ্যেই পড়ে।"

অন্যদিকে, এ বিষয়ে অ্যামাজনের একজন মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

সিএনএন জানায়, ট্রাম্পের এসব অভিযোগের বাস্তবিক কোনো ভিত্তিই নেই। ওয়াশিংটন পোস্ট বহু আগে থেকেই ট্রাম্পবিরোধী আচরণ দেখিয়ে আসছে। এ ছাড়াও অ্যামাজন-এর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৬০ কোটি ডলার লাভের বিপরীতে আয়কর বাবদ ২৭.৩ কোটি ডলার পরিশোধ করে। অ্যামাজনের বিরুদ্ধে যে বিক্রয় শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে না এবং ওয়াশিংটন পোস্টের মাধ্যমে 'প্রভাবিত' রাজনীতিবিদদের সঙ্গে এই আইনের কোনো সম্পর্কই নেই।

এর আগে ট্রাম্পের এসব অভিযোগের জবাব অনেকটা হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতেই দিয়েছেন বেজোস। এক টুইটার বার্তায় তিনি ট্রাম্পকে তার 'ব্লু অরিজিনস' রকেটগুলোর একটিতে চড়িয়ে মহাশূন্যে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব রাখেন।