বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দেওয়া জেড ক্যাটগরির ও দুর্বল মৌলভিত্তির বেশ কয়েকটি শেয়ার দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকা দখল করেছে।
Published : 22 Nov 2017, 04:34 PM
এগুলোর মধ্যে বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরবৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে সাভার রিফ্র্যাকটরিজ; শেয়ারটির দর আগের দিনের চেয়ে নয় দশমিক ৯৭ শতাংশ বেড়েছে।
গত পাঁচ মাসে জেড ক্যাটগরির এই কোম্পানির শেয়ারের দর প্রায় তিনগুণ বেড়ে ‘অতিমূল্যায়িত’ হয়ে পড়েছে। ১৭ কার্যদিবসে শেয়ারটির দর ৯৩ শতাংশ বেড়ে বৃহস্পতিবার ১৫৫ টাকা ৪০ পয়সায় উঠেছে।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানি সাভার রিফ্র্যাকটরিজ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারে কোম্পানিটির ২১ পয়সা লোকসান হয়েছে।
সাভার রিফ্র্যাকটরিজ সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে তা জানা যায়নি। ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানির লভ্যাংশ ও আয় সম্পর্কে ২০১২ সাল থেকে পরিসংখ্যান দেওয়া আছে। ওই সময় থেকে কোম্পানি কোনও লভ্যাংশ দেয়নি বলে দেখা গেছে।
নয় দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার দর পৌঁছেছে ১০৪ টাকা ৮০ পয়সায়।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানিটির শেয়ার গত ১৩ অগাস্ট থেকে ছয় সেপ্টেম্বরের মধ্যে মাত্র ১৫ কার্যদিবসে ১৭০ শতাংশ বেড়ে ৪১ টাকা থেকে ১১২ টাকায় উঠে যায়।
এরপর শেয়ারটির ‘অস্বাভাবিক’ দরবৃদ্ধি কারণ খতিয়ে দেখতে ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন থেকে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটি গঠনের পর শেয়ারটির দর পড়তে শুরু করে ২২ অক্টোবর ৭১ টাকা ২০ পয়সা চলে আসে। এরপর আবার ‘অস্বাভাবিক’ দরবৃদ্ধি শুরু হয়। মাত্র ১০ কার্যদিবসে ৫৯ শতাংশ বেড়ে ১১৩ টাকা ৫০ পয়সা হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার পাট খাতের জুট স্পিনার্স বেড়েছে নয় দশমিক ৬৬ শতাংশ। গত ১০ কার্যদিবসে জেড ক্যাটগরির শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪৯ শতাংশ।
কোম্পানিটি সর্বশেষ আড়াই শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০১২ সালে। ২০১৭ সালের জুন শেষে ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারে কোম্পানিটির লোকসান দেখিয়েছে ৪৯ টাকা।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানিটি প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লোকসান করেছে চার টাকার বেশি। প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে প্রকৃত সম্পদ মূল্য -(২০০) টাকা। তবু বেড়েই চলেছে এ শেয়ারের দর।
জেড ক্যাটগরির সমতা লেদারের শেয়ার এদিন নয় দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা।
ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। বছরের পর বছর লোকসানে চলা স্বল্প মূলধনি কোম্পানিটি প্রথম প্রান্তিকেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) লোকসানে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার শ্যামপুর সুগার সাত দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা ৬০ পয়সা। জেড ক্যাটগরির এ শেয়ারটির দর গত ছয় কার্যদিবসে বেড়েছে ৫২ দশমিক ৮১ শতাংশ।
ডিএসই থেকে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে কোনও মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে কি না- জানতে চাওয়া হলে বৃহস্পতিবার কোম্পানির কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে এ ধরনের কোনও তথ্য নেই।
অন্তত গত ছয় বছরে কোম্পানিটির লভ্যাংশ দেয়নি। এসময় বড় ধরনের লোকসানের মূখে রয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারে লোকসান হয়েছে ১৭ টাকা ৬৪ পয়সা। প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে প্রকৃত সম্পদ মূল্য ৬৭৭ টাকা নেতিবাচক।