অবণ্টিত লভ্যাংশ মার্চে জমা না দিলে কয়েকগুণ জরিমানার হুঁশিয়ারি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অবণ্টিত লভ্যাংশ চলতি মার্চের মধ্যে সিএমএসএফ তহবিলে জমা না দিলে কয়েকগুণ জরিমানা করা হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2022, 01:17 PM
Updated : 15 March 2022, 01:20 PM

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলি রুবাইয়াত-উল-ইসলাম মঙ্গলবার এই হুঁশিয়ারি দেন।

যেসব কোম্পানি এখনও অবণ্টিত লভ্যাংশ তহবিলে জমা করেনি তাদের চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

শিবলি রুবাইয়াত বলেন, “আমরা অনেক সময় দিয়েছে এবং অপেক্ষা করেছি। চলতি মাসের পরে আর সময় দেওয়া হবে না। ৩১ মার্চের পরে কমিশন কঠোর হবে।

“কোনো কোম্পানি যদি চলতি মাসের মধ্যে যদি ওই লভ্যাংশের হিসাব দিতে না পারে এবং ফান্ড কোথায় রয়েছে, তা বলতে না পারে ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে স্থানান্তর না করে, তাহলে কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। অবণ্টিত লভ্যাংশের থেকে কয়েকগুণ বেশি জরিমানা হবে।”

মঙ্গলবার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও শেয়ারহোল্ডারদের দাবি মীমাংসা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান এই হুঁশিয়ারি দেন।

পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশ চলতি ৩১ মার্চের মধ্যে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলে (সিএমএসএফ) জমা করার নির্দেশ দিয়ে এর আগে কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়েছিল বিএসইসি।

লভ্যাংশ জমা না করা কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, “আইপিওর মাধ্যমে বাজারে আসার পর থেকে এই পর্যন্ত জমা হওয়া অবণ্টিত লভ্যাংশ কোথায় রাখা হয়েছে? কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে? নাকি কেউ নিয়ে গেছে? তা খুঁজে বের করা হবে।

“এই অর্থ খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক মানের নিরীক্ষক দিয়ে নিরীক্ষা করা হবে। এর মাধ্যমে ওই টাকা কোথায় গেছে, তা খুজে বের করব। যে টাকা আপনাদের না, তা আপনারা নিলেন কেন? অন্যের টাকা নিয়ে নিজেদের বিল্ডিং-বাড়ি বানানোর অধিকার কেউ দেয়নি।”

এই অর্থ বিনিয়োগকারীদের পাওনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবণ্টিত লভ্যাংশ তারা পেলে পুঁজিবাজারের উপর আস্থা রাখায়ও তা ভূমিকা রাখবে।

“এই বাজারে বিনিয়োগ করলে যে লভ্যাংশ ফেরত পাওয়া যায় এবং তাদের পাওনা আদায়ের জন্য একটি কার্যকর নিয়ন্ত্রক সংস্থা আছে, সেটা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করবে।”

পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল গঠন কাজে লেগেছে এবং বিনিয়োগকারীদের ‘ভয়ের কিছু নেই’ বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।

গত সপ্তাহের দরপতন নিয়ে শিবলি রুবাইয়াত বলেন, ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

“তবে আমরা স্ট্র্যাটেজিক ও ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠেছি। এক্ষেত্রে স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”

অনুষ্ঠানে বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড গঠন নিয়ে আমাদের যে উদ্দেশ্য ছিল, সেটা সঠিক এবং বাস্তবসম্মত ছিল, যা গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট ও বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।”

ঢাকার হোটেল পূর্বাণীতে অনুষ্ঠিত এ সভার আয়োজন করে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ)। এতে সভাপতিত্ব করেন সিএমএসএফ চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিস্টেড কোম্পানির (বিএপিএলসি) সদ্য বিদায়ী সভাপতি আজম জে চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন।