ঊর্ধ্বমুখী সূচকেই শেষ হল অস্থির সপ্তাহ

ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে আতঙ্ক কাটিয়ে বৃহস্পতিবারও বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে, তাতে ঊর্ধ্বমুখী সূচক নিয়ে সপ্তাহ শেষ করেছে পুঁজিবাজার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2022, 11:09 AM
Updated : 10 March 2022, 11:19 AM

দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৮ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৬৬৮ দশমিক ১৫ পয়েন্ট হয়েছে।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯৩টির, কমেছে ১৪৭টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির।

ইউক্রেইনে যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অস্থিরতার প্রভাবে টানা দরপতন হচ্ছিল দেশের পুঁজিবাজারে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ৫০০ পয়েন্ট হারায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসই।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন দেখে ঢাকার বাজার। এ পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি পতন ঠেকাতে উদ্যোগী নেওয়ার পর বুধবার ডিএসইএক্স বাড়ে ১৫৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট পয়েন্ট।

সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বিএসইসি গঠিত পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল (সিএমএসএফ) থেকে ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

পাশাপাশি বুধবার থেকে নিম্নমুখী সার্কিট ব্রেকার ২ শতাংশ করার কথা বলা হয়। অর্থাৎ, কোনো শেয়ারের দর কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ। তবে আগের মতোই একদিনে দর বাড়তে পারবে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।

এ দুই উদ্যোগে মঙ্গলবার বড় পতন কাটিয়ে সূচক সামান্য বেড়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। আর বুধবার

ব্যাংকারদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়াতে তিন ‘সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার কথা জানায় বিএসইসি।

তাতে বুধবার ডিএসইএক্স বাড়ে ১৫৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট। সেই ধারাবাহিকতা বৃহস্পতিবারও থাকল।

এদিন হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৬১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার; আগের দিন এর পরিমাণ ছিল ৭৭৩ কোটি ১ লাখ টাকা।

লেনদেনে শীর্ষ ১০ কোম্পানি: বেক্সিমকো লি., ফরচুন সুজ, বিডিকম, বিএসসি, জেনেক্সিল, অরিয়ন ফার্মা, ইউনিয়ন ব্যাংক, অগ্নি সিস্টেমস, ড্রাগন সোয়েটার ও কুইনসাউথ টেক্সটাইল।

দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ কোম্পানি: বিডিকম, অগ্নি সিস্টেমস, ভিএফএস থ্রেড, কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ, কুইনসাউথ টেক্সটাইল, ইয়াকিন পলিমার, ইনটেক অনলাইন, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ঢাকা ডায়িং ও তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ।

সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০ কোম্পানি: ন্যাশনাল টি কোম্পানি, জেমিনি সি ফুড, লিবরা ইনফিউশন, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, বিডি ল্যাম্পস, লিনডে বিডি, এপেক্স ফুড, রেনউইক যগেশ্বর, এএমসিএল প্রাণ ও অ্যাপেক্স ট্যানারি।

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৩৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট হয়েছে। আর ডিএস ৩০ সূচক ৯ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৪২৫ দশমিক ১১ পয়েন্টে।

এদিন চট্টগ্রামের বাজারেও বেড়েছে সূচক। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৬১ দশমিক ০৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৩ শতাংশ বেড়ে ১৯ হাজার ৫৬১ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট হয়েছে।

এদিন মোট ২৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ২৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ছিল।

এ বাজারে লেনদেন হওয়া ২৮৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৪টির, কমেছে ৭১টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দর।