এবার উল্টো চিত্র, ডিএসইতে দাম বাড়ল ৩৬৫ শেয়ারের

ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কেটেছে আগের দিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার ইতিবাচক সিদ্ধান্তে; এতে একদিন বাদেই উল্টো চিত্র দেখা গেছে দেশের পুঁজিবাজারে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2022, 12:28 PM
Updated : 9 March 2022, 12:28 PM

বুধবার দিনের শুরু থেকেই আগের তিন দিনের বড় পতনের ধাক্কা কাটিয়ে লালের বদলে সবুজের ছড়াছড়ি ছিল পুঁজিবাজারের লেনদেন বোর্ডে।

সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চেয়ে কেনার দিকে ঝোঁক বেশি থাকায় প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে দাম বেড়েছে ৩৬৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের। কমেছে মাত্র তিনটির।

এতে সপ্তাহের চতুর্থ দিন বুধবার এ বাজারের প্রধান সূচক বেড়েছে ডিএসইএক্স আগের দিন থেকে ১৫৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৬৩০ দশমিক ০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

একদিনে এ উত্থান শতাংশের হিসাবে গত ১৪ মাসের মধ্যে বেশি। এর আগে গত বছরের ১২ জানুয়ারিতে এরচেয়ে বেশি সূচক বেড়েছিল, ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

ইউক্রেইনে যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অস্থিরতার প্রভাবে গত কয়েক দিন ধরে টানা দরপতন হচ্ছিল দেশের পুঁজিবাজারে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ৫০০ পয়েন্ট হারায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসই।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ২০০৮ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন দেখে ঢাকার বাজার। মঙ্গলবারও সেই ধারা চলতে থাকলে পতন ঠেকাতে উদ্যোগী হয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি।

সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বিএসইসি গঠিত পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল (সিএমএসএফ) থেকে ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

পাশাপাশি বুধবার থেকে নিম্নমুখী সার্কিট ব্রেকার ২ শতাংশ করার কথা বলা হয়। অর্থাৎ, কোনো শেয়ারের দর কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ। তবে আগের মতোই একদিনে দর বাড়তে পারবে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।

এ দুই উদ্যোগে গত মঙ্গলবার সূচক পতনের সেঞ্চুরি থেকে ঘুরে দাঁড়ায় দেশের পুঁজিবাজার। বড় পতন কাটিয়ে সূচক সামান্য বেড়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। বুধবার আরও বাড়ল সূচক।

এদিন ডিএসইতে লেনদেনও বেড়েছে আগের দিনের তুলনায় কিছুটা। ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বা ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেড়ে ৭৭৩ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ৭৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা।

বুধবার এ বাজারে দাম কমেছে মাত্র ১ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের। বিপরীতে ৯৭ শতাংশের দাম বেড়েছে এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

মোট লেনদেন হওয়া ৩৭৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬৫টির এবং কমেছে ৩টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির দর।

ঢাকার অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৩০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৪২৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে।

ডিএস ৩০ সূচক ৪১ দশমিক ৫২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ৪১৫ দশমিক ৬০ পয়েন্টে।

এদিন চট্টগ্রামের পুঁজিবাজার সিএসইতেও সূচক ও লেনদেন বেড়েছে।

এ বাজারের প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৮২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেড়ে অবস্থান করছে ১৯ হাজার ৪০০ দশমিক ৫১ পয়েন্টে।

লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ১০ দশমিক ৯৯ শতাংশ বা ২ কোটি ৪২ লাখ টাকা বেশি হয়েছে। মোট ২৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন ছিল ২২ কোটি ৩ লাখ টাকা।

সিএসইতে ২৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫০টির, কমেছে ৩২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির দর।